মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন পরীক্ষা ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা সম্পর্কে কী সুপারিশ করেছিল তা আলােচনা করাে।
উত্তরঃ মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড: লক্ষ্মণস্বামী মুদালিয়রের নেতৃত্বে 1952 সালের 23 সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশন মুদালিয়র কমিশন নামেও পরিচিত।
পরীক্ষা ও মূল্যায়নের উন্নতি বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশনের দু'টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হলাে—
1) শুধু বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের প্রমােশন দেওয়া যাবে । অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফলাফল ও ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যান্য কাজের রেকর্ডও বিবেচনা করা দরকার হবে। এছাড়া
2) নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে মুদালিয়র কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, প্রচলিত পরীক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার করে শিক্ষার্থীদের অগ্রগতির মূল্যায়নের জন্য অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা ও শিক্ষকদের দ্বারা রক্ষিত বিদ্যালয়ের রেকর্ডের উপর যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যদিকে প্রশ্নপত্রে রচনাধর্মী প্রশ্নের পাশাপাশি নৈব্যক্তিক অভীক্ষারও প্রবর্তন করতে হবে।
মুদালিয়র কমিশন মাধ্যমিক স্তরের শেষে শুধুমাত্র একটি সাধারণ বহিস্থ পরীক্ষা গ্রহণের সুপারিশ করেছিল। কমিশন শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষার মূল্যায়নের জন্য নম্বরের পরিবর্তে পাঁচটি গ্রেডের সুপারিশ করেছিল। এগুলি হলাে— A-Distinction, B-Credit, C-Pass, D and E-Failure optat faptarting 71695 মূল্যায়ন প্রসঙ্গেও মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন পাঁচটি স্কেলের সুপারিশ করেছিল। এগুলি হলাে— A-Execellent, B-Good, C-Fair and Average, D-Poor এবং E-Very Poor।
প্রসঙ্গত, পরীক্ষা একটি প্রয়ােজনীয় ক্ষতিকারক প্রক্রিয়া। এর সঠিক বিকল্প এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। এজন্য মুদালিয়র কমিশন গতানুগতিক পরীক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক বিষয়াত্মক পরীক্ষা ব্যবস্থার দ্বারা নির্ভরযােগ্য করে তােলার সুপারিশ করে। কিন্তু । এই সংস্কারের কোনাে সঠিক নির্দেশ না থাকায় মাধ্যমিক স্তরের মূল্যায়ন আজও পরীক্ষা-শাসনে জর্জরিত। ফলে এখনও এই স্তরে অপচয় ও অনুত্তীর্ণতার অভিশাপ একইভাবে কাজ করে চলেছে।