দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে কী বােঝ? এই ক্ষত কীভাবে ঔরঙ্গজেবের পতন ডেকে আনে?

খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকে ঔরঙ্গজেবের আমলে মারাঠাদের শক্তি বৃদ্ধি পায়। ঔরঙ্গজেব তাই দক্ষিণী রাজ্যগুলিকে জয় করার উদ্যোগ নেন। বিজাপুর, গােলকোন্ডা রাজ্যগু
দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে কী বােঝ এই ক্ষত কীভাবে ঔরঙ্গজেবের  পতন ডেকে আনে ?


ঔরঙ্গজেবের আমলে মুঘল সাম্রাজ্যে যেসব সমস্যা দেখা দেয় সেগুলির অন্যতম ছিল দাক্ষিণাত্য ক্ষত।

দাক্ষিণাত্য ক্ষত: খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকে ঔরঙ্গজেবের আমলে মারাঠাদের শক্তি বৃদ্ধি পায়। ঔরঙ্গজেব তাই দক্ষিণী রাজ্যগুলিকে জয় করার উদ্যোগ নেন। বিজাপুর, গােলকোন্ডা রাজ্যগুলি দখল করেন। এই দুই রাজ্য দখল করতে গিয়ে তাকে বহু বছর ধরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চালাতে হয়। এর পরিণাম হিসেবে মুঘলদের বিপুল আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে। এই ক্ষয়ক্ষতিকেই দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলা হয়েছে।

ঔরঙ্গজেবের পতনে দাক্ষিণাত্য ক্ষতের ভূমিকা ---

[1] মারাঠা শক্তির উত্থান: ঔরঙ্গজেব বিজাপুর ও গােলকোন্ডা রাজ্য দুটি অধিকার করায়, মুঘল সাম্রাজ্যের আয়তন বৃদ্ধি পায়। সুদূর দিল্লি থেকে দক্ষিণে রাজ্যশাসন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে মারাঠা শক্তির উত্থান সহজ হয়।

[2] বিপুল অর্থব্যয় : দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সম্রাটের দক্ষিণ ভারত অভিযানে মুঘলদের বহু সৈন্য নিহত হয় এবং প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। 

[3] প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা : ঔরঙ্গজেবের দীর্ঘদিন দিল্লিতে অনুপস্থিতি প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছিল। যার ফলে মালব, রাজস্থান, মথুরা, গন্ডােয়ানা, বিহার, বাংলা প্রভৃতি স্থানে মুঘলবিরােধী শক্তিগুলি ক্ষমতা দখল করতে তৎপর হয়।

[4] সৈন্যবাহিনীর ক্ষোভ : রাজকোশে তীব্র অর্থাভাব দেখা দিলে সেনাবাহিনীকে বেতন দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে তাদের মধ্যে কর্মপ্রেরণা হ্রাস পায় এবং ক্ষোভ বৃদ্ধি পায়। এইসব কারণে ভিনসেন্ট স্মিথ বলেছেন “দাক্ষিণাত্যে ঔরঙ্গজেবের শরীর ও সাম্রাজ্য উভয়ের কবর রচিত হয়েছিল |
Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box