প্রথম অংশ : হরপ্পা অঞলে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়ায় এবং এইসব নিদর্শনের প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অনেক বেশি হওয়ায় বর্তমানে এই সভ্যতাকে হরপ্পা সভ্যতা বলা হয়।
দ্বিতীয় অংশ : হরপ্পা সভ্যতার বিস্তার : সিন্ধুনদের তীরে প্রথম এই সভ্যতা আবিষ্কৃত হয় বলে আগে মনে করা হত যে, শুধুমাত্র সিন্ধু উপত্যকায়
এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার ও গবেষণার ফলে এই ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। এই সভ্যতার প্রধান দুটি কেন্দ্রের একটি হল হরপ্পা (পাকিস্তানের পাঞ্জাব রাজ্যের মন্টোগােমারী জেলার অন্তর্গত), অপরটি হল মহেঞ্জোদারাে (পাকিস্তানের সিন্ধুরাজ্যের লারকানা রাজ্যের অন্তর্গত)। সাম্প্রতিককালের আবিষ্কার এই সভ্যতার পরিধিকে সিন্ধুতট অতিক্রম করে পাকিস্তানের অন্যান্য স্থান (যেমন : চানদরাে, কালিবঙ্গান, বেলুচিস্তান, আমারি, বালাকোট) ভারতের নানান স্থান (যেমন : নর্মদা নদীর উপত্যকা, লােথাল, সৌরাষ্ট্র, কাথিয়াবাড়, রাজস্থান, রােপার, আলমগীরপুর প্রভৃতি) এবং ভারতের বাইরেইরান পর্যন্ত বিস্তৃত করেছে,
উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ, পশ্চিমে ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী সীমান্ত এবং দক্ষিণে খাম্বাত উপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, অর্থাৎ পূর্ব-পশ্চিমে ১,১০০ কিলােমিটারের বেশি এবং উত্তর-দক্ষিণে ১,৬০০ কিলােমিটারেরও বেশি অঞ্চল জুড়ে ছিল এই সভ্যতার বিস্তার।
তৃতীয় অংশ : হরপ্পা সভ্যতার পয়ঃপ্রণালী ও জলনিকাশী ব্যবস্থা : হরপ্পা সভ্যতার নগরগুলােতে বাড়ির ভেতর থেকে জলনিকাশের জন্য নর্দমা থাকত। এই নর্দমাগুলাে সদর রাস্তার বাঁধানাে বড়াে নর্দমার সঙ্গে যুক্ত থাকত। এই সভ্যতার জলনিকাশী ব্যবস্থা ছিল সত্যিই চমকপ্রদ। হরপ্পা সভ্যতার শহরগুলােকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ডাস্টবিন ও ম্যানহােল ব্যবস্থার প্রচলন ছিল। স্বভাবতই এ থেকে উপলব্ধি করা যায় যে, সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীগণ স্বাস্থ্য সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন। ঐতিহাসিক ব্যাসাম যথার্থই বলেছেন যে, বিশ্বের আর কোনাে দেশে এইরকম জলনিকাশী ব্যবস্থার নিদর্শন পাওয়া যায়নি।