মুঘল সম্রাটদের কি কোনাে নির্দিষ্ট উত্তরাধিকারনীতি ছিল? উত্তরাধিকারের বিষয়টি কেমনভাবে তাদের শাসনকে প্রভাবিত করেছিল?
মুঘল উত্তরাধিকার নীতি ---
তৈমুরীয় নীতি: বাবরের পূর্বপুরুষ তৈমুর লঙ উত্তরপুরুষদের মধ্যে সাম্রাজ্যের অকূল ভাগ করে দেওয়ার নীতি প্রবর্তন করেন।
ভারতবর্ষে মুঘলদের নীতি: ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার পর বাবর প্রথমেই তৈমুরীয় নীতি অগ্রাহ্য করেন৷ মুমায়ুনও একই পন্থা অনুসরণ করেন। তবে এই বিষয়ে মুঘলদের কোনাে সুস্পষ্ট নীতি ছিল না।
উত্তরাধিকার সংক্রান্ত অস্পষ্ট নীতির প্রভাব জাহাঙ্গির পরবর্তী উত্তরাধিকারকে কেন্দ্র করে মুঘলদের মধ্যে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবর তাঁর সাম্রাজ্যে উত্তরাধিকার হিসেবে হুমায়ুনকে মনােনীত করে গিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে ঘুমায়ুনের আকস্মিক মৃত্যুতে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর শাসক হওয়ার সুযােগ পান। আকবরের পর জাহাঙ্গির শাসক হলেও মতবিরােধ শুরু হয়। জাহাঙ্গিরের মৃত্যুর পর শাহজাহান সামরিক বলে ও অভিজাতদের সমর্থনে সিংহাসনে বসেন| শাহজাহানের জীবনের শেষদিকে সিংহাসন দখলের জন্য ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধে ঔরঙ্গজেব দারা ও মুরাদকে হত্যা করেন। কালক্রমে সুজা আরাকানে পালিয়ে গেলেও সেখানে তার মৃত্যু হয়। এইভাবে উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিরােধিতার প্রভাবে মুঘল সাম্রাজ্যে ঐক্য ও সংহতি বিনষ্ট হয়। পরিণতি হিসেবে ঔরঙ্গজেবের পর থেকে স্থায়ী শাসনব্যবস্থার অভাব দেখা দেয়। যার ফলে সুবিশাল মুঘল সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক বিদ্রোহ শুরু হয়।