মুঘল সাম্রাজ্যের দক্ষ সম্রাটদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আকবর ও ঔরঙ্গজেব| তবে এঁদের চরিত্রে নানা বৈপরীত্য দেখা যায়।
[1] দৃষ্টিভঙ্গিগত : আকবর অনুভব করেছিলেন যে, রাজপুতদের সাহায্য ছাড়া মুঘল সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। কিন্তু ঔরঙ্গজেব তা মনে করতেন না। ব্রাম্মণরা হিন্দুধর্মের মানসিক শক্তি আর রাজপুতরা তাদের দৈহিক শক্তি, এই সত্য আকবর অনুধাবন করলেও ঔরঙ্গজেব তা করতে পারেননি বা চাননি।
[2] সম্পর্কস্থাপনে : আকবর অম্বররাজ বিহারীমলের কন্যা মণিবাঈকে (মতভেদে, যােধাবাঈ, বুক্সাবাঈ) বিবাহ করেন এবং বিকানীর, জয়পুরের দুই রাজকন্যারও পাণিগ্রহণ করেন। তিনি নিজ পুত্র যুবরাজ সেলিমের সঙ্গে যােধপুরের উদয় সিংহের কন্যার বিবাহ দেন। কিন্তু ঔরঙ্গজেব বন্ধুত্ব ও বৈবাহিকসূত্রে রাজপুতদের সঙ্গে সম্পর্কস্থাপনে আগ্রহী ছিলেন না।
[3] প্রশাসনিক নিয়ােগগত: আনুগত্য লাভের জন্য আকবর আয়ােজনে করেন।
টোডরমলকে রাজস্ব মন্ত্রী হিসেবে, বীরবল (আসল নাম মহেশ)-কে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়ােগ করেন। কিন্তু ঔরঙ্গজেব এভাবে রাজপুতদের তার প্রশাসনে স্থান দেওয়ার বিরােধী ছিলেন।
[4] সুযােগসুবিধাদানে: রাজপুতদের মন জয়ের উদ্দেশ্যে আকবর হিন্দুদের ওপর থেকে বিভিন্ন ধরনের কর প্রত্যাহার করেন৷ রাজদরবারে রাজপুতসহ হিন্দু কর্মচারীদের বিশেষ মর্যাদা দেন। হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠানে (হােলি, দশেরা, দেওয়ালি)প্রশাসনিক ও আর্থিক সাহায্যদান ।
কিন্তু ঔরঙ্গজেবের তরফ থেকে এই ধরনের কোনাে উদ্যোগ দেখা যায়নি। বরং তিনি অমুসলিমদের চোখে অত্যাচারী হয়ে উঠেছিলেন।