আগ্রহ কাকে বলে? এর বৈশিষ্ট্য লেখাে। শিক্ষাক্ষেত্রে আগ্রহের ভূমিকা লেখাে।

আগ্রহ বা অনুরাগ প্রকৃতপক্ষে একটি স্বাধীন প্রবণতা বা জৈব-মানসিক সংগঠন। প্রখ্যাত মনােবিদ জোন্স, ড্রেভার, ম্যাকডুগাল, লােভেল সকলেই নিজের মতাে করে আগ্রহের
আগ্রহের সংজ্ঞা : আগ্রহ বা অনুরাগ প্রকৃতপক্ষে একটি স্বাধীন প্রবণতা বা জৈব-মানসিক সংগঠন। প্রখ্যাত মনােবিদ জোন্স, ড্রেভার, ম্যাকডুগাল, লােভেল সকলেই নিজের মতাে করে আগ্রহের সংজ্ঞা দিয়েছেন। তার ভিত্তিতে বলা যায়, “আগ্রহ বলতে সেই মানসিক প্রক্রিয়াকে বােঝায় যা ব্যক্তিকে কোনাে বিশেষ কাজে আকৃষ্ট করার পাশাপাশি সেই কাজে একনিষ্ঠ হওয়া এবং সেই কাজ সম্পন্ন করার প্রেরণা দেয়।” প্রসঙ্গত, এই প্রবণতা সহজাত নয়, অর্জিত।

আগ্রহের বৈশিষ্ট্য : আগ্রহের বেশ কিছু উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য আছে যা একে অন্যান্য মানসিক প্রক্রিয়া থেকে পৃথক করে।

প্রথমত :আগ্রহ একটি স্থায়ী মানসিক প্রক্রিয়া বা সংগঠন।
দ্বিতীয়ত : ব্যক্তির পারিপার্শ্বিক পরিবেশভেদে আগ্রহের রকমফের দেখা যায়। 
তৃতীয়ত : ব্যক্তিভেদে আগ্রহের চরিত্র বা ধরন আলাদা হয়। 
চতুর্থত :আগ্রহের ধরন বয়সের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টায়। 
পঞ্চমত : আগ্রহ চাহিদার উপর নির্ভরশীল। চাহিদার অনুভূতি আগ্রহ সৃষ্টি করে। 
ষষ্ঠত : এটি মনােযােগের প্রাথমিক ধাপ।
সপ্তমত : কোনাে কাজে সাফল্য ব্যক্তির আগ্রহ বাড়াতে ভূমিকা নেয়। 
■ শিক্ষাক্ষেত্রে ভূমিকা : শিক্ষা এবং আগ্রহ দ্বিমুখী সম্পর্কে জড়িত। কারণ শিক্ষা কর্মসূচির লক্ষ্যই হলাে স্কুলে নানাবিধ কর্মসূচি পালন ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে পাঠের প্রতি শিশুর আগ্রহ বাড়িয়ে তােলা। শিক্ষায় আগ্রহের ভূমিকাকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যায় ----
1) শিশুর সার্বিক বিকাশের পাশাপাশি পাঠের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির উপযােগী কর্মসূচি গ্রহণ করে শিক্ষা।
2) পাঠ্য বিষয় নির্বাচনে শিশুকে স্বাধীনতা দিতে হবে। এর মাধ্যমে বিষয়ের প্রতি শিশুর আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে।
3) শিশুর মেধা ও পছন্দের দিকে লক্ষ রেখে সহ-পাঠক্রমিক কর্মসূচির পরিকল্পনা করা প্রয়ােজন।
4) শিশুকে নিত্যনতুন অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করা। এতে আগ্রহের পরিসর বাড়ে। 
5) যে কোনাে বিষয়ের প্রতি শিশুর স্বতঃস্ফূর্ত মনােভাবকে সর্বদা অনুপ্রাণিত করা প্রয়ােজন।

এইভাবে দেখা যায় যে শিক্ষণীয় বিষয়ের প্রতি শিশুর আগ্রহ বৃদ্ধির মাধ্যমে শিশুর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গঠন সম্ভব।
Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box