টীকা লেখাে :কর্ণসুবর্ণ
সূচনা: শশাঙ্কের রাজত্বকালে গৌড়ের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। এর আর-এক নাম কানসােনা।
অবস্থান: পশ্চিমবঙ্গের মুরশিদাবাদ জেলার চিরুটিই হল কর্ণসুবর্ণ। স্থানীয়ভাবে এটি রাজা কর্ণের প্রাসাদ নামে পরিচিত।
ঐতিহাসিক নিদর্শন : বর্তমান চিরুটি রেলস্টেশনের কাছে রাজবাড়িডাঙায় প্রাচীন রক্তমৃত্তিকা (রাঙামাটি) বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। চৈনিক পর্যটক হিউয়েন সাঙের বিবরণীতে এর উল্লেখ আছে| চিনা ভাষায় এই বৌদ্ধবিহারটির নাম ললাটো-মাে-চিহ। আর এর নিকটেই ছিল তৎকালীন গৌড়ের রাজধানী শহর কর্ণসুবর্ণ।
মানুষজন: হিউয়েন সাঙের বিবরণ থেকে জানা যায় যে, দেশটি জনবহুল এবং সেখানকার মানুষজন অত্যন্ত সমৃদ্ধ মানুষের চরিত্র ভালাে এবং তারা শিক্ষাদীক্ষার পৃষ্ঠপােষক| এখানে বৌদ্ধ এবং শৈব উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের বাস ছিল।
ব্যাবসাবাণিজ্য: কর্ণসুবর্ণ ছিল সেকালের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র। সম্ভবত শশাঙ্ক-পূর্ববর্তী সময় থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে এই অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। এমনও নিদর্শন পাওয়া গেছে যে, রক্তমৃত্তিকা থেকে জাহাজ নিয়ে জনৈক বণিক মালয় অঞ্চলে বাণিজ্য করতে গিয়েছিলেন।
রাজনৈতিক পালাবদল : কর্ণসুবর্ণে বারবার রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। শশাঙ্কের মৃত্যুর পর অল্প সময়ের জন্য এটি কামরূপের রাজা ভাস্করবর্মার দখলে চলে যায়। এরপর কিছুকাল এটি ছিল জয়নাগের রাজধানী। কিন্তু সপ্তম শতকের পর এর কথা আর বিশেষভাবে জানা যায় না।