“বীর সন্ন্যাসী বিবেকের বাণী ছুটেছে জগত্ময়” কোন প্রসঙ্গে এই বক্তব্য? বীরসন্ন্যাসীর পরিচয় দাও। এই বক্তব্যের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে।

উঃ কুহু ও কেকা কাব্যের অন্তর্গত ‘আমরা’ কবিতায় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এই উক্তিটি করেছেন। এই বাংলার বুকে জন্মগ্রহণ করেছেন অগণিত বিশ্ববরেণ্য মনীষী। তাঁদের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে কবি পরম শ্রদ্ধায় এই উক্তিটি করেছেন।

বীর সন্ন্যাসী হলেন বিবেকানন্দ। তাঁর খ্যাতি ভুবনজোড়া। ১৮৬৩, ১২ জানুয়ারি তাঁর জন্ম। তার পিতা বিশ্বনাথ দত্ত, মাতা ভুবনেশ্বরী দেবী। প্রথম বিভাগে তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৮৮৪ সালে বি.এ পাশ করেন। দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃয়ের সান্নিধ্যে এসে তার ভাবান্তর ঘটে। পরে তিনি বিবেকানন্দ নামে পরিচিত হন। ১৮৯৩ সালে শিকাগােতে সনাতন হিন্দু ধর্ম নিয়ে তার বক্তৃতা বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করে।

বাঙালির ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। এই জাতি লঙ্কা জয় করেছে। মগ দস্যুদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মােগলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। এখানে জন্ম নিয়েছেন কপিল মুনি। আবার এই বাংলার সন্তান শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর তুষারশৃঙ্গ জয় করে তিব্বতে গিয়েছেন। 

কবি সত্যেন্দ্রনাথ বাঙালির স্থাপত্য-ভাস্কর্য-শিল্পেরও প্রশংসা করেছেন। কীর্তন আর বাউলের গানে বাঙালি মুগ্ধ। কবি লিখেছেন -------

“কীর্তন আর বাউলের গানে আমরা দিয়েছি খুলি
মনের গােপনে নিভৃত ভুবনে দ্বার ছিল যতগুলি।”

 এই জাতি মন্বন্তরে মরেনি। মহামারিতেও ভয় পায়নি। সারা বিশ্বে বাঙালির প্রভাব দেখা যায়। তাই কবি স্বামী বিবেকানন্দের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। অতি গর্বের সঙ্গে লিখেছেন—

“বীর সন্ন্যাসী বিবেকের বাণী ছুটেছে জগৎময়,
বাঙালির ছেলে ব্যাঘ্রে বৃষভে ঘটাবে সমন্বয়।"
স্বামী বিবেকানন্দের জগৎজোড়া কর্মকাণ্ডকে কবি সত্যেন্দ্রনাথ অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করেছেন।

Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box