হরপ্পার বাণিজ্য সম্পর্কে আলােচনা করাে।
সূচনা : দেশের ভিতরে ও বাইরে হরপ্পার বাণিজ্য চলত।
হরপ্পার বাণিজ্য
1) জলপথ ধরে বাণিজ্য :
(i) সমুদ্রপথ ধরে: হরপ্পা সভ্যতার ২৩টি সিলমােহর মিলেছে মেসােপটেমিয়ায়। এই সিলমােহরগুলি থেকে বােঝা যায় যে হরপ্পা ও মেসােপটেমিয়া উভয় সভ্যতার মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন ছিল। মেসােপটেমিয়াতে হরপ্পার বণিকরা সম্ভবত বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করত। মেসােপটেমিয়াতে প্রাপ্ত এক সিলমােহরের খােদিত লিপি পড়ে জানা যায় হরপ্পার সঙ্গে মেসােপটেমিয়ার জলপথ ধরে বাণিজ্য চলত। হরপ্পা সভ্যতার যুগে পারস্য উপসাগরীয় এলাকার সমুদ্র বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
(ii) নদীপথ ধরে: মহেনজোদারাের এক সিলমােহরে খােদাই করা এক নৌকার ছবি মিলেছে | এ থেকে জানা যায় হরপ্পা সভ্যতায় পালতােলা নৌকার ব্যবহার ছিল | আসলে নদীর স্রোত ও হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে নৌকার সাহায্যে নদীপথ ধরে বাণিজ্য চলত।
(iii) আমদানি ও রপ্তানি দ্রব্য: বিদেশ থেকে হরপ্পা সভ্যতায় আমদানি করা হত সােনা, রুপাে, তামা, দামি পাথর, হাতির দাঁতের তৈরি চিরুনি, পাখির মূর্তি প্রভৃতি। আর হরপ্পা থেকে রপ্তানি করা হত বার্লি, ময়দা, তেল ও পশমজাত দ্রব্য প্রভৃতি।
2) স্থলপথ ধরে বাণিজ্য : ইরানে হরপ্পার সিলমােহর ও এখনকার তুর্কমেনিস্তানে হরপ্পার শিল্পদ্রব্যের খোঁজ মিলেছে। জানা গেছে এই দুই স্থানে স্থলপথ ধরে হরপ্পার বাণিজ্য চলত। স্থলপথে বাণিজ্যের মাধ্যম ছিল ভারবাহী পশু, দুই চাকা টানা গাড়ি প্রভৃতি।