বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সুপারিশগুলি আলােচনা করাে। অথবা, নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন যে সব সুপারিশ করেছে, সেগুলি আলােচনা করাে
ভূমিকা : ভারত সরকার 1948 সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন করে। এই কমিশনের সভাপতি ছিলেন ড. সর্বপল্লি রাধাকৃয়ন। তার নামানুসারে এই কমিশন রাধাকৃয়ন কমিশন নামে পরিচিত। এই কমিশনের সুপারিশগুলি হলাে :
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার কাঠামাে ; বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মানােন্নয়নের জন্য কমিশন উচ্চশিক্ষার যে সকল কাঠামাের সুপারিশ করেছে, তা হলাে
1) ১২ বছর বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের পর শিক্ষার্থীরা কলেজে কলা বা বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। তৎকালীন প্রচলিত দু'বছরের ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় কৃতকার্যতাই হবে কলেজে প্রবেশের অভিজ্ঞানপত্র।
2) পাস ও অনার্স উভয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু করতে হবে। অনার্স কোর্সের শিক্ষার্থীরা ১ বছর এবং পাস কোর্সের শিক্ষার্থীরা ২ বছর পড়াশােনার পর মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পাঠ্যক্রম : বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পাঠ্যক্রম সম্পর্কে কমিশন বলেছে, সাধারণ শিক্ষায় তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক উভয়দিকে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা থাকবে এবং সেইভাবে পাঠ্যসূচি তৈরি করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষালাভের সুযােগ পায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
শিক্ষার মাধ্যম : কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত শিক্ষাদানের মাধ্যম হিসাবে একটি ত্রিভাষা সূত্র সুপারিশের কথা বলেছে।
a) আঞ্চলিক ভাষা বা মাতৃভাষা,
b) রাষ্ট্রভাষা,
c) ইংরেজি ভাষা।
কমিশন বলেছে, আঞ্চলিক ভাষা বা মাতৃভাষা উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হওয়া উচিত। তবে কোনাে কোনাে বিষয়ের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করা যেতে পারে।
পরীক্ষা ব্যবস্থা : পরীক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য কমিশনের সুপারিশগুলি হলাে -
1) পরীক্ষা রচনাধর্মী না হয়ে যতটা সম্ভব নৈর্ব্যক্তিক হতে হবে।
2) সমগ্র শিক্ষাবর্ষ ধরে শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার মূল্যায়ন করতে হবে।
3) স্নাতক স্তরে তিন বছরের শেষে একটি পরীক্ষার পরিবর্তে তিন বছরে তিনটি পরীক্ষা করতে হবে।