সুলতান মাহমুদের ভারত আক্রমণ সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: গজনির ইয়ামিনি বংশের সুলতান আবদুল কাসেম মাহমুদ ইতিহাসে সুলতান মাহমুদ নামে পরিচিত। তিনি ১০০০-১০২৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ২৭ বছরে ১৭ বার ভারত আক্রমণ
উত্তর: গজনির ইয়ামিনি বংশের সুলতান আবদুল কাসেম মাহমুদ ইতিহাসে সুলতান মাহমুদ নামে পরিচিত। তিনি ১০০০-১০২৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ২৭ বছরে ১৭ বার ভারত আক্রমণ করেন। তিনি ভারতের প্রভূত সম্পদ লুঠ করে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে ঐতিহাসিক স্মিথ তাঁকে ‘ক্ষমতাবান লুণ্ঠনকারী দস্যু’ বলে অভিহিত করেছেন।
আক্রমণের উদ্দেশ্য: সুলতান মাহমুদের ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ আছে।
[1] সুলতান মাহমুদের ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল ভারতের ধনসম্পদ লুঠ করা। তাই তিনি ভারতে স্থায়ী সাম্রাজ্যও প্রতিষ্ঠা করেননি।
[2] সুলতান মাহমুদ ধর্মীয় কারণে ভারতের পৌত্তলিকতার ধ্বংসসাধন করার জন্য ভারত আক্রমণ করেন। ধর্মীয় উন্মাদনার জন্যই তিনি হিন্দুদের মঠ ও মন্দিরগুলি লুঠ করেন।
[3] ঐতিহাসিক মহম্মদ হাবিবের মতে, সুলতান মাহমুদের ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল সোনা ও সম্মান অর্জন করা।
অভিযান : সুলতান মাহমুদ ১০০০ খ্রিস্টাব্দে খাইবার গিরিপথ দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য অভিযানগুলি হল— ১০০১ খ্রিস্টাব্দে শাহিবংশীয় রাজা জয়পালের বিরুদ্ধে অভিযান, ১০০৮ খ্রিস্টাব্দে মুলতান দখল। ১০০৮-০৯ খ্রিস্টাব্দে শাহিবংশের রাজা আনন্দপাল মাহমুদের বিরুদ্ধে একটি শক্তিজোট গঠন করে যুদ্ধ করলেও শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। সুলতান মাহমুদ মথুরা, কনৌজ প্রভৃতি অঞ্চলের মন্দিরগুলি লুঠ করেছিলেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অভিযান ছিল গুজরাটের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন (১০২৫-২৬ খ্রি.) অভিযান।
ফলাফল :
প্রথমত, সুলতান মাহমুদের ভারত আক্রমণের সূত্র ধরে ভারতে মুসলিম আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছিল। তাই তাঁকে ‘মহম্মদ ঘুরির পথপ্রদর্শক’ বলে অভিহিত করা হয়।
দ্বিতীয়ত, তাঁর আক্রমণের ফলে ভারতের সঙ্গে মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।