স্মৃতির প্রশিক্ষণ বা শিখনের সহজ উপায় সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: স্মৃতির প্রশিক্ষণ বা শিখনের সহজ উপায় :
1) অতিশিখন ও রুটিন পদ্ধতি : কোনো শিখন সম্পূর্ণ হওয়ার পর আরও কয়েকবার শেখা হল অতিশিখন (Over Learning)। অন্যদিকে কোনো বিষয়কে নিয়মমাফিক রুটিন পদ্ধতিতে পড়লে তা স্মৃতিতে দীর্ঘস্থায়ী হয়।
2) আংশিক ও সামগ্রিক পদ্ধতি : বিষয়বস্তু দীর্ঘ ও নীরস হলে আংশিক ও বিষয়টির দৈর্ঘ্য কম হলে সামগ্রিক পদ্ধতিতে শিখন ভালো হয় যা স্মৃতিতে দীর্ঘস্থায়ী হয়।
3) SURVEY - Q - 3R পদ্ধতি : 3R = Read (পড়া), Recite (আবৃত্তি), Review (পর্যালোচনা); Q = Question (প্রশ্নকরণ) এবং Survey পর্যবেক্ষণ করা। এই পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজে বিষয় আয়ত্ত করে ও মনে রাখে। এটির স্রষ্টা হলেন রবিনসন।
4) সবিরাম শিখন : ডিয়ারবর্ন (Dearborn), জস্ট (Jost), লায়ন (Lion) প্রমুখ মনোবিদদের মতে, কোনো বিষয় শেখার ক্ষেত্রে বিরতি দিয়ে শিখলে তা দীর্ঘদিন মনে থাকে।
5) মনোযোগ : মনোযোগ ছাড়া শিখন অসম্ভব। স্মরণ পরোক্ষভাবে মনোযোগের উপর নির্ভরশীল।
6) ছন্দ ও অনুষঙ্গ পদ্ধতি : মনোবিদ মুলার ছন্দযুক্ত শিখনের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। অন্যদিকে শিক্ষণীয় বিষয়কে পূর্ব অভিজ্ঞতা ও বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতিবিধানের মাধ্যমে শেখালে অনেকদিন মনে থাকে।
7) দ্রুত শেখা : দ্রুত শিখে নেওয়া উত্তম স্মৃতির লক্ষণ। যে দ্রুত শিখতে পারে সে উত্তম স্মৃতির অধিকারী হয়।
8) সুবিন্যস্তকরণ : অভিজ্ঞতার বিষয়সমূহকে এমনভাবে বিষয়গত মিল রেখে বিন্যস্ত করতে হবে যাতে সংগতি বজায় থাকে। এর মাধ্যমে স্মৃতির সাহায্যে বিষয়টিকে ধরে রাখা যাবে।
9) মিশ্র পদ্ধতি : দীর্ঘ কোনো বিষয়বস্তুকে মনে রাখার জন্য সামগ্রিক ও আংশিক উভয় পদ্ধতিকে একত্রে অবলম্বন করে মনে রাখা হয়।
সুতরাং সমগ্র আলোচনা থেকে বলা যায়, উত্তম স্মৃতি শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। উপযুক্ত উদ্দীপক ব্যবহার করে পাঠ্যবিষয়কে যদি শিক্ষার্থীদের সামনে ধাপে ধাপে উপস্থাপন করা যায়, অর্থবহ করে গড়ে তোলা যায়, তাহলে বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মনে গভীরভাবে রেখাপাত করবে।