“বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় এখনও নানারকম বাধা আছে।”- লেখক কোন্ ধরনের বাধার কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু ‘বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান’ রচনার ক্ষেত্রে। বেশ কয়েকটি অসুবিধের কথা বলেছেন। যেমন—পারিভাষিক শব্দ: প্রথমেই যে সমস্যার কথা বলা হয়েছে তা হল পারিভাষিক শব্দের অভাব লেখক জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এ সমস্যার সমাধান সম্পূর্ণরূপে সম্ভব হয়নি। বৈজ্ঞানিক জ্ঞান: দ্বিতীয় সমস্যা হল, পাশ্চাত্য জনসাধারণের তুলনায় এদেশের জনসাধারণের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান খুব কম। বিজ্ঞানের প্রাথমিক ধারণাগুলির সঙ্গে পরিচয় না থাকলে কোনো বৈজ্ঞানিক লেখা বোঝা কঠিন। বিজ্ঞানশিক্ষার বিস্তার ঘটলে এ সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে। রচনাপদ্ধতি অনুসরণ: তৃতীয় সমস্যা, বিজ্ঞান রচনার জন্য যে রচনাপদ্ধতির দরকার, তা এখনও আমাদের লেখকরা রপ্ত করতে পারেননি। বহুক্ষেত্রেই লেখার ভাষায় আড়ষ্টতা থাকে এবং তা ইংরেজি ভাষার আক্ষরিক অনুবাদ হয়ে পড়ে। ফলে রচনাটি উৎকট হয়ে যায়। এই সমস্যার হাত থেকে বাঁচবার জন্য, বাংলা ভাষার প্রকৃতি অনুযায়ী লেখার পদ্ধতি আয়ত্ত করতে হবে৷ অল্পবিদ্যা: চতুর্থ সমস্যাটি হল, লেখকের অল্পবিদ্যার সমস্যা লেখক বিজ্ঞান কম জানলে তাঁর রচনায় থাকা ভুল তথ্য বা অস্পষ্ট তথ্য সাধারণ পাঠকের পক্ষে ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। উপসংহার: তাই প্রাবন্ধিকের পরামর্শ হল, বৈজ্ঞানিক লেখা প্রকাশের আগে অভিজ্ঞ লোককে দিয়ে তা অবশ্যই যাচাই করে নেওয়া উচিত।