বাতাস ও সূর্যের শক্তির গল্প
একদিন সূর্য এবং বাতাসের মধ্যে একটা তর্ক বেধে গেল—কে বেশি শক্তিশালী? সূর্য তার তাপ আর আলো নিয়ে গর্ব করছিল, আর বাতাস তার প্রবল শক্তি নিয়ে। তারা ঠিক করল, এক পরীক্ষা নেওয়া হবে, এবং সেই পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ হবে কে বেশি শক্তিশালী।
পরীক্ষার জন্য তারা বেছে নিল এক পথিককে, যিনি তখন তার কাঁধে একটা বড় চাদর পেঁচিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। সূর্য এবং বাতাসের সিদ্ধান্ত হলো, যে পথিকের কাছ থেকে চাদরটা সরাতে পারবে, সে-ই হবে প্রকৃত শক্তিশালী।
প্রথমে বাতাস শুরু করল। সে জোরে জোরে শ্বাস ফেলতে লাগল, আর প্রবল বেগে ফুঁ দিল। বাতাসের তীব্র ঝাপটায় পথিকের চাদরটা উড়ে যাওয়ার উপক্রম করল। কিন্তু যত বেশি বাতাস বইল, পথিক ততই শক্ত করে তার চাদরটাকে গায়ে পেঁচিয়ে নিল। বাতাসের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হলো। সে যত জোরেই ঝাপটা দিক না কেন, পথিক তার চাদরটা ছাড়ল না।
এরপর সূর্যের পালা এলো। সূর্য ধীরে ধীরে তার তাপ ছড়াতে শুরু করল। আকাশ পরিষ্কার হয়ে গেল, আর সূর্যের উজ্জ্বল আলোতে পথিক ঘেমে যেতে লাগল। কিছুক্ষণ পর, অতিরিক্ত গরমে পথিক আর চাদর রাখতে পারল না। সে নিজেই চাদরটা খুলে ফেলল এবং হালকা অনুভব করে হাঁটতে লাগল।
বাতাস তখন মেনে নিল, সত্যিকার শক্তি শুধু প্রবলতায় নয়, বুদ্ধিমত্তায়ও রয়েছে। সূর্য কোনো জোর বা তাড়না ছাড়াই তার তাপের মাধ্যমে কাজটা করে ফেলেছিল। বাতাস হাসিমুখে পরাজয় স্বীকার করল এবং তারা দুজনেই বুঝল, প্রকৃত শক্তি মানে নিজের শক্তিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা, জোর করে নয়।
এইভাবেই সূর্য এবং বাতাসের মধ্যে বন্ধুত্ব ফিরে এলো, আর তারা একে অপরের শক্তিকে সম্মান করতে শিখল।