অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | ঠাণ্ডা লড়াইয়ের যুগ (সপ্তম অধ্যায়) – দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন | HS Class 12 History Suggestion 2024
১. কেন্নানের বেষ্টনী নীতি বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ আমেরিকার রাষ্ট্রদূত জর্জ এফ . কেন্নান
এক প্রবন্ধে রুশ আগ্রাসন প্রতিরোধ এবং রাশিয়াকে সীমাবদ্ধ করে রাখার জন্য যে নীতি
পেশ করেন সেটাই কেন্নানের বেষ্টনী নীতি ।
২. লেভারে প্ল্যান বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ ভিয়েতনামের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন
ভিয়েতমিনদের সমূলে ধ্বংস করার লক্ষ্যে ফরাসি সেনাপতি যে নতুন পরিকল্পনা নেন
সেটাকেই বলা হয় নেভারে প্ল্যান ।
৩. কারা চিনে কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলেন ?
উত্তরঃ চৌ – এন – লাই , চু – তে , মাও – সে –
তুং , লিও – কাও – চি প্রমুখের উদ্যোগে চিনে কমিউনিস্ট পার্টির জন্ম হয় ।
৪. ইয়াল্টা সম্মেলন কেন ডাকা হয় ?
উত্তরঃ এই সম্মেলনের উদ্দেশ্যগুলি ছিল– ( ক )
যুদ্ধ – পরবর্তী সময়ে জার্মানির ভবিষ্যৎ নির্ণয় করা ( খ ) পোল্যান্ডকে কেন্দ্র
করে উদ্ভূত সমস্যা মীমাংসা করা ( গ ) বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি
আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গঠন ।
৫. ব্যালফুর ঘোষণাপত্র কী ?
উত্তরঃ ইংরেজ বিদেশ সচিব আর্থার ব্যালফু প্রথম
বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি ঘোষণাপত্র জারি করেন । এতে বলা হয় , প্যালেস্টাইনে
ইহুদিদের জন্য জাতীয় বাসভূমি গড়ে তোলায় সচেষ্ট হবে ব্রিটিশ সরকার ।
৬. কমিকন কীভাবে গড়ে ওঠে ?
উত্তরঃ মার্শাল পরিকল্পনার পাল্টা হিসেবে ১৯৪৯
সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন কমিকন ( Council for Mutual Economic Assistance বা COMECON
) নামে একটি আর্থিক সহায়তা পরিষদ গড়ে তোলে ।
৭. জোটনিরপেক্ষ নীতি বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত
রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী জোট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবাধীন জোট এর
বাইরে থেকে নিরপেক্ষ অবস্থানের নীতিকেই বলা হয় জোটনিরপেক্ষ নীতি ।
৮. বার্লিন অবরোধ বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ বার্লিনে রুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে রাশিয়া ১৯৪৮ – এর ২৪ জুলাই বার্লিনে প্রবেশের সড়কপথগুলিতে অবরোধ শুরু
করে । এটাই বার্লিন অবরোধ নামে বিখ্যাত ।
৯. ভিয়েতনামের যুদ্ধ বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ ইন্দোচিনে হো – চি – মিনের নেতৃত্বে
ভিয়েতনামবাসীর দীর্ঘ লড়াই ভিয়েতনামের যুদ্ধ বলে পরিচিত । ১৯৪৫–৭৫ খ্রিঃ পর্যন্ত
চলেছিল এই যুদ্ধ ।
১০. পঞ্চশীল নীতি কাকে বলে ?
উত্তরঃ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতির ভিত্তিতে
চিনের প্রধানমন্ত্রী চৌ – এন – লাই ১৯৫৪ সালে দ্বিতীয়বার ভারতে এসে দ্বিপাক্ষিক
পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ৫ টি নীতি স্থির করেন । এটাকেই বলা হয় পঞ্চশীল নীতি ।
১১. লং মার্চ বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ ১৯৩৬ – এর ১৬ অক্টোবর মাও – সে – তুং
এবং চু – তের উদ্যোগে কমিউনিস্টদের ঐক্য বৃদ্ধির জন্য কিয়াংসি প্রদেশ থেকে শেনসি
পর্যন্ত ৬০০০ মাইল পথ অতিক্রম করার ঘটনা লং মার্চ নামে বিখ্যাত ।
১২. কেন মার্শাল পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল ?
উত্তরঃ এর উদ্দেশ্য ছিল– ( ক ) রাশিয়ার
আগ্রাসন প্রতিরোধ করা । ( খ ) ইউরোপের আর্থিক সংকট কাটিয়ে ওঠা ( গ ) মার্কিন
বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং ( ঘ ) কমিউনিস্টদের অগ্রগতি প্রতিহত করা ।
১৩. বুলগানিন কেন বিখ্যাত ?
উত্তরঃ সোভিয়েত রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী
ছিলেন বুলগানিন ।
১৪. সুয়েজ সংকট কেন দেখা যায় ?
উত্তরঃ মিশরের রাষ্ট্রপতি গামাল আবদেল নাসেরের
১৯৫৬ সালে সুয়েজ খাল জাতীয়করণের কথা ঘোষণা করাকে কেন্দ্র করেই সুয়েজ সংকট দেখা
দেয় ।
১৫. ভিয়েত কং বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ ১৯৬০ খ্রিঃ উভয় ভিয়েতনামে কমিউনিস্টদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী সামরিক বাহিনীকে বলা হতো ভিয়েত কং ।
১৬. LAFP এর সম্পূর্ণ নাম
উত্তরঃ Liberation Armed Force ( PLAF ) I The
People’s —
১৭. ট্রুম্যান নীতি গৃহীত হয় কেন ?
উত্তরঃ রাশিয়ার নেতৃত্বে সাম্যবাদী আদর্শের
প্রসার রোধে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যান ১৯৪৭ সালে
ট্রুম্যান নীতি ঘোষণা করেন ।
ঠান্ডা লড়াইয়ের
পটভূমি অথবা কোন পরিস্থিতিতে ঠান্ডা লড়াই – এর উদ্ভব হয় ?
উত্তরঃ ঠান্ডা লড়াইয়ের
পটভূমি :
ত্বলশেভিক বিপ্লবের বিরোধিতা :
ঠান্ডা লড়াই মূলত ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের পরে শুরু হলেও এর পটভূমি তৈরি হয়েছিল ১৯১৭
খ্রিস্টাব্দে রুশ বিপ্লবের হাত ধরে । কারণ রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবকে দমন করতে
আমেরিকা ষড়যন্ত্রের সমর্থনে রাশিয়ায় সেনা পাঠায় ।
দ্বিতীয় রণাঙ্গনের প্রশ্ন : দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধকালে দ্বিতীয় রণাঙ্গনের প্রশ্নে জাপানের উপর পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণে
মতভেদ শুরু হয় । এই মতভেদ পরবর্তীতে ঠান্ডা লড়াইয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে ।
মার্কিন সেনাদপ্তর পেন্টাগনের প্রভাব
: মার্কিন সামরিক দপ্তর পেন্টাগনের সদস্যগণ ছিলেন সাম্যবাদ বিরোধী ।
সুতরাং তাঁরা মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যানকে সোভিয়েত রাশিয়ার প্রতি কঠোর নীতি
গ্রহণ করতে প্ররোচিত করেন
পারস্পরিক সন্দেহ : কিছু ঐতিহাসিকের
মতে , পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত
রাশিয়া মিলিতভাবে অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল । কিন্তু যুদ্ধ শেষে কোনো
সাধারণ শত্রুর অবর্তমানে তাদের পারস্পরিক সন্দেহ ও অবিশ্বাস আবার তীব্র হয় ।
ফুলটন বক্তৃতা : কিছু ঐতিহাসিকের
মতে , ১৯৪৬ – এ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসে
ফুলটন নামক স্থানে বক্তৃতায় আমেরিকাকে সতর্ক করে বলেন যে উত্তরে বার্লিন শহরের
বিস্তৃত এলাকা এখন সোভিয়েত রাশিয়ার লৌহ যবনীকার অন্তরালে আচ্ছাদিত । এখন যদি
সতর্ক না হওয়া যায় তাহলে রাশিয়া সম্পূর্ণ ইউরোপকে গ্রাস করবে ।
ট্রুম্যান নীতি : গ্রিস , তুরস্ক ও ইরানে রুশ অনুপ্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিলে
এদেশগুলিকে রুশ প্রভাব থেকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যান
গ্রিস ও তুরস্ক সহ বিশ্বের যে কোনো দেশে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সামরিক ও আর্থিক
সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন । এই ঘোষণা ট্রুম্যান নীতি নামে পরিচিত ছিল ।
মার্শাল পরিকল্পনা : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন মার্শাল ইউরোপে আর্থিক পুনরুজ্জীবনের জন্য এক
পরিকল্পনা প্রকাশ করেন যা মার্শাল পরিকল্পনা নামে খ্যাত । তবে এই পরিকল্পনায়
রাশিয়াকে অর্থনৈতিক সাহায্য থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয় ।
জার্মান সমস্যা : জার্মানিকে কেন্দ্র
করে ক্রমেই ঠান্ডা লড়াই ব্যাপক আকার ধারণ করে । সমগ্র জার্মানির ঐক্যবদ্ধতার
সমাধান না করে সমগ্র জার্মানি দু’টি ভাগে বিভক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার
ধারণ করেন । দুই জার্মনির দু’ধরনের আর্থ – রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঠান্ডা লড়াইয়ের
খোরাক জোগাতে থাকে ।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া : মার্শাল
পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়া তার মিত্র দেশগুলিকে নিয়ে
গড়ে তোলে কমিকন । এরপর রাশিয়া বার্লিন অবরোধ করলেও মিত্রশক্তির তৎপরতায় অবরোধ
তুলে নিতে বাধ্য হয় যা উভয়ের মধ্যে বিদ্বেষের সূচনা করে ।
বিভিন্ন জোট : উভয়পক্ষই এরপর
থেকে নিজেদের প্রভাব বুদ্ধিতে সচেষ্ট হয় । ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র NATO গঠন করে । পক্ষান্তরে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ার নেতৃত্বে
কমিকন গঠিত হয় । এছাড়া দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি নিয়ে গড়ে ওঠে SEATO ।
মূল্যায়ন : পরিশেষে বলা যায়
যে কেবলমাত্র ইউরোপে নয় ঠান্ডা লড়াইয়ের প্রভাবে সমগ্র বিশ্ব দু’টি পরস্পর
বিরোধী শক্তিজোটে বিভক্ত হয়ে পড়ে । এর বহিঃপ্রকাশ লক্ষ করা যায় বার্লিন সংকট ,
কোরিয়া সংকট ও কিউবা সংকটের মধ্য দিয়ে ।
ট্রুম্যান নীতি কী
? মার্শাল পরিল্পনার উদ্দেশ্যগুলি কী ছিল ?
উত্তরঃ ট্রুম্যান নীতি : দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে সমগ্র বিশ্ব পরস্পর বিরোধী দু’টি পৃথক শক্তি শিবিরে
বিভক্ত হয়ে যায় । এর একদিকে ছিল আমেরিকা এবং অপরদিকে ছিল সোভিয়েত রাশিয়া ।
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন রাষ্ট্রপতি হ্যারি ট্রুম্যান মার্কিন কংগ্রেসের এক
বক্তৃতায় আশ্বাস দেন যে যদি কোনো মুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কোনো সংখ্যালঘু
গোষ্ঠী বা কোনো বিদেশি রাষ্ট্র দ্বারা আক্রান্ত হয় তা হলে আমেরিকা তাদের সাহায্য
করবে । রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যানের এই ঘোষণা ট্রুম্যান নীতি ‘ নামে পরিচিত ।
মার্শাল পরিকল্পনার উদ্দেশ্য : মূলত দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউরোপের আর্থিক পুনরুজ্জীবন – এর এই উদ্দেশ্যগুলি ছিল এই রকম
।
অর্থনৈতিক উজ্জীবন : মার্শাল পরিকল্পনার
মূল উদ্দেশ্য ছিল আর্থিক পুনরুজ্জীবন । এই পরিকল্পনা অনুসারে ১৯৪৮-৫১
খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মোট ১২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয় । এই আর্থিক সাহায্য পাবার
ফলে ইউরোপের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলির অর্থনীতি পূর্বের ন্যায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে ।
অর্থ অনুমোদন : মার্শাল পরিকল্পনা
অনুসারে রাষ্ট্রপতি টুম্যান কর্তৃক ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে মার্কিন কংগ্রেসে
১৭ বিলিয়ন ডলার অর্থ মঞ্জুরের জন্য বিল উত্থাপন করা হলে ১৩ বিলিয়ন ডলার মঞ্জুর
করা হয় ।
পরিকল্পনা গ্রহণকারী বিভিন্ন দেশ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে ইউরোপের ছোটো – বড়ো মিলে ১৬ টি দেশ মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল । এই পরিকল্পনা গ্রহণকারী দেশগুলি একত্রিত হয়ে ‘ European Economic Co – operation ‘ বা EEC নামে একটি সংস্থা গড়ে তোলে ।
ঠান্ডা লড়াই বলতে কী বোঝো । ঠান্ডা
লড়াইয়ের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা করো ।
উত্তরঃ সূচনা দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের পর বৃহৎ শক্তিধর দুই রাষ্ট্র রাশিয়া এবং আমেরিকা নিজ নিজ শক্তি
প্রদর্শনের লক্ষ্যে একদিকে ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রজোট ও অপরদিকে সমাজতান্ত্রিক
রাষ্ট্রজোট গড়ে তোলে সমগ্র বিশ্বজুড়ে এই দ্বিমেরুকরণের রাজনীতি ঠান্ডা লড়াই –
এর সৃষ্টি করে । এম . এস . রজেম – এর মতে , ঠান্ডা লড়াই ছিল ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ,
আদর্শের সংঘাত , জীবনধারার বিরোধ থেকে উদ্ভূত ।
ঠান্ডা লড়াই – এর প্রধান বৈশিষ্ট্য—
কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা : দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধান্তে অর্থাৎ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পরবর্তীতে একদিকে আমেরিকা এবং অপরদিকে
রাশিয়া হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রধান শক্তিধর রাষ্ট্র এবং প্রত্যেকে
সমগ্র বিশ্বে নিজ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সচেষ্ট হলে শুরু হয় ঠান্ডা লড়াই ।
বিভিন্ন রাষ্ট্রের সমর্থন লাভের
দ্বন্দ্ব : রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমর্থনলাভের জন্য
দ্বন্দ্ব উদ্ভব ঘটায় দ্বিমেরু রাজনীতির ।
রাজনৈতিক মতাদর্শজনিত বিভেদ : মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও ব্যক্তিস্বাধীনতার পক্ষে এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন
সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ও সাম্যবাদের পক্ষে পারস্পরিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয় ।
সামরিক শক্তি বৃদ্ধি : উভয় রাষ্ট্রেই নিজ
নিজ সামরিক শক্তির প্রদর্শনের লক্ষ্যে বিভিন্ন শক্তিশালী মারণাস্ত্র তৈরি করতে
শুরু করে যা সমগ্র বিশ্বে এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে ।
আঞ্চলিক সীমাবদ্ধতা : দু’পক্ষেরই অনুগত
কোনো রাষ্ট্র কোনো অঞ্চলে যুদ্ধরত হলে ঐ যুদ্ধকে ঐ অঞ্চলে সীমাবদ্ধ রাখতে উভয়েই
তৎপর হয়ে ওঠে ।
ঠান্ডা লড়াই : এর প্রভাব
ঠান্ডা লড়াই – এর আবর্তে জড়িয়ে
পড়া : দু’টি শক্তিশালী
রাষ্ট্র রাশিয়া ও আমেরিকা নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের ঠান্ডা লড়াই – এর পরিবেশ
তৈরি করলে কখনোই নিজেদের মধ্যে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েনি অথচ তৃতীয়
বিশ্বের দেশগুলির পক্ষে ঠান্ডা লড়াই – এর আবর্ত থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়নি ।
আমেরিকা ও রাশিয়ার আধিপত্ত
বিস্তারের প্রচেষ্টা : ধনতান্ত্রিক আমেরিকা ও সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার মধ্যে ইউরোপকে
কেন্দ্র করে ঠান্ডা লড়াই – এর যে পরিবেশ তৈরি হয়েছিল তা খুব সহজেই ছড়িয়ে
পড়েছিল এশিয়া মহাদেশের মধ্যে । দুই কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধ , সুয়েজ সংকট , আরব –
ইজরায়েল বিরোধ , ভিয়েতনাম সংকট , ইরাক – ইরান যুদ্ধ , ইরাক – কুয়েত লড়াই ,
পাকিস্তান – ভারত যুদ্ধ ইত্যাদি হলো তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ।
শক্তিজোটগুলির প্রভাব : রাশিয়া ও আমেরিকার
ঠান্ডা লাড়াইকে কেন্দ্র করে উভয় রাষ্ট্রই নিজ নিজ স্বার্থে গড়ে তুলেছিল একাধিক
সংগঠন । দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার মুক্তি সংস্থা MEDO , মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিরক্ষা
সংস্থা SEATO , সেন্ট্রাল টিটি অরগানাইজেশন প্রভৃতি ঠান্ডা লড়াইকে দৃঢ়ভাবে
প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেছিল ।