কোনি উপন্যাসের কোনি চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।

ভুমিকা– মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসটি কোনি নামের মেয়েটির জীবনযুদ্ধেরই কাহিনি। শ্যামপুকুর বস্তিতে মা ও সাত ভাই-বোনের সঙ্গে তার দিন কাটে। সে স্বভাবে ডানপিটে, চেহারায় তার পুরুষালি ভাব। ঘাড় পর্যন্ত ছাঁটা তার চুল। কালো হিলহিলে শরীরটি যেন কেউটের মতো।
লড়াকু মানসিকতা – গল্পের শুরুতে গঙ্গায় আম কুড়োনো থেকে শুরু করে, ক্লাইম্যাক্সেন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের সুইমিং পুলে সর্বত্রই কোনির লড়াকু মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। ২০ ঘণ্টা হাঁটা প্রতিযোগিতা, বাংলা চ্যাম্পিয়ন অমিয়াকে হারানো এবং সবশেষে মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতা-উপন্যাসের সর্বত্র কোনির লড়াকু মনোভাব প্রমাণিত হয়েছে। 
পরিশ্রমী ও কষ্টসহিষ্ণু – দারিদ্র্যের সাথেই কোনিদের বসবাস। সে বিশ্বাস করে “বড়লোকরা গরিবদের ঘেন্না করে।” চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধাকে হারিয়ে সে নিজেকে অনুশীলনে যুক্ত রাখে। নিজের টিফিনের টাকা, ‘প্রজাপতি'-তে কাজ করে উপার্জিত সামান্য চল্লিশ টাকা সে সংসারেই দিয়ে দিত। নিজের কাজের প্রতিও দায়িত্বশীল ছিল সে।
অভিমানী – কোনির সমস্ত অভিমান ছিল ক্ষিতীশ সিংহকে ঘিরে। মাদ্রাজ যাওয়ার সময় এবং সেখানে গিয়ে ক্ষিতীশ ছাড়া অসহায় কোনির অভিমান প্রবলভাবে জেগে ওঠে। বাংলাকে না ভালোবাসার অপবাদ যখন তাকে দেওয়া হয় তখন তার শত অপমান, বঞ্চনা অভিমানে পরিণত হয়। তাই হিয়া বা অমিয়াকে হারিয়ে সে তার জবাব দিতে চেয়েছিল এবং বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করে, সে সকলকেই জবাবও দিয়েছে।
উপসংহার – কোনির নিষ্ঠা, একাগ্রতা, লড়াকু পরিশ্রমী মানসিকতা এই চরিত্রটিকে অনবদ্য করে তুলেছে। চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকলেও কোনির ভিতরে থাকা শিশুসুলভ মনটি হারিয়ে যায়নি। তার চিড়িয়াখানা দেখা কিংবা রাত জেগে যাত্রা দেখার মধ্যে শিশুসুলভ মনের পরিচয় মেলে।
Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box