আমাদের বাংলা উপভাষাগুলির কি কথ্য ও লেখ্য রূপ আছে? এদের মর্যাদা কেমন?
◆ বাংলা উপভাষাগুলির দুটি করে রূপ আছে। ওই রূপ দুটি হল কথ্য ও লেখ্য। ওই কথ্য ও লেখা রূপ থেকেই উপভাষাগুলির স্বাতন্ত্র্য ও বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ে। মনে রাখতে হবে, ভাষাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কোনাে উপভাষা কারও থেকে উৎকৃষ্ট বা শ্রেষ্ঠ নয়। ছােটো বা বড়ােও নয়। তারা সমান মান্যতার দাবি রাখে।
তবে লেখ্য ভাষার রূপটি সমাজের সর্বস্তরে মান্যতা পায় বলে, কোনাে ভাষার পরিচয় দিতে গেলে শুধু তার লেখ্য রূপটিরই উদাহরণ দেওয়া হয়। কিন্তু লেখ্য ভাষাও হল একটি উপভাষা মাত্র। কথ্য এবং লেখ্য ভাষার সমবায়ে যা পাওয়া যায়, তাই হল আসল ভাষা।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করলে দেখা যায়, রাঢ়ি, বঙ্গালি, বরেন্দ্রী, ঝাড়খণ্ডি এবং কামরূপী এদের সকলের সমবায়েই বাংলা ভাষার পরিপূর্ণ পরিচয়।
তবে ঐতিহাসিক কারণে উপরােক্ত উপভাষাগুলির মধ্যে কোনাে একটি প্রধান উপভাষা হয়ে মূল ভাষার পরিচায়ক হয়ে ওঠে—এটা সব ভাষার ক্ষেত্রে প্রযােজ্য। এবং অন্যান্য উপভাষাগুলি মূল ভাষা প্রবাহকে অনবরত শব্দশক্তি জোগান দিয়ে তার শ্রীবৃদ্ধি ঘটায়।