পাল যুগের বিদ্যাচর্চার কেন্দ্রগুলির বিবরণ দাও।
সূচনা: পাল রাজাদের পৃষ্ঠপােষকতায় বাংলা এবং বিহারের বৌদ্ধবিহারগুলি শিক্ষাচর্চার মূলকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।
পাল যুগের বিদ্যাচর্চার কেন্দ্রসমূহ ---
[1] ওদন্তপুরী বিহার: পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা গােপাল বৌদ্ধ শাস্ত্র ও দর্শন পাঠের জন্য ওদন্তপুরী বিহার (বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ছিলেন বিখ্যাত বৌদ্ধ পণ্ডিত শান্তিরক্ষিত।
[2] বিক্রমশীলা বিহার: ধর্মপাল প্রতিষ্ঠিত বিক্রমশীলা মহাবিহারে দেশ-বিদেশের প্রায় ৩০০০ শিক্ষার্থী বিদ্যাচর্চা করতেন। এখানে ১৪৪ জন অধ্যাপকের মধ্যে প্রখ্যাত ছিলেন দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান, কল্যাণরক্ষিত, বুদ্ধজ্ঞানপাদ, শ্রীধর প্রমুখ। এঁদের মধ্যে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ছিলেন। এখানে বৌদ্ধধর্মশাস্ত্র, ন্যায়শাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র, দর্শন, ব্যাকরণ, জ্যোতিষশাস্ত্র, চিকিৎসাশাস্ত্র ইত্যাদি নানা বিষয়ে পঠনপাঠন হত।
[3] সােমপুর বিহার: ধর্মপাল প্রতিষ্ঠিত সােমপুর বিহারও বিদ্যাচর্চার অন্যতম কেন্দ্র ছিল। এই বিহারের শিক্ষার্থীদের সমস্ত ব্যয়ভার রাষ্ট্র বহন করত।
[4] নালন্দা: পাল যুগে বৌদ্ধধর্মচর্চা ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র ছিল নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। এর পৃষ্ঠপােষক ছিলেন দেবপাল। তার আমলে নগরহারের বৌদ্ধ স্থবির বীরদেব নালন্দা মঠের অধ্যক্ষ ছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বৌদ্ধধর্ম ও দর্শনের বিভিন্ন শাখা, বেদ, সাংখ্য ও যােগ দর্শন, যুক্তিবিদ্যা, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা ও চিকিৎসাশাস্ত্র পড়ানাে হত।