চর্চাপদের তথ্যসন্ধানী ছােটো প্রশ্নোত্তর

১) বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের আদি নিদর্শন কী? সেটি কে আবিষ্কার করেন?  
অথবা, বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম গ্রন্থটির নাম কী ? কে এর পুথি আবিষ্কার করেন?
উঃ বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন বা প্রাচীনতম গ্রন্থটির নাম ‘চর্যাপদ’ অর্থাৎ ‘চর্যাচর্যবিনিশ্চয়'। মহামহােপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এর পুথি আবিষ্কার করেন।
২) চর্যাপদগুলি কোন্ সময়ে লেখা হয়েছিল? চর্যাপদ’এর দুইজন কবির নাম উল্লেখ করাে।
উঃ চর্যাপদ’গুলি আনুমানিক নবম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে লেখা হয়েছিল। চর্যাপদ’-এর দুজন কবি হলেন লুইপাদ ও কাহ্নপাদ।
৩) চর্যাপদ’ কবে কোথা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল? কী নামে?
উঃ কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে অন্য কয়েকটি অবাংলা গ্রন্থসহ চর্যাপদ প্রকাশিত হয়েছিল হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোঁহা’ নামে। 
৪) চর্যাপদ’-এর পুথিটি কে কোথা থেকে আবিষ্কার করেন ? 
উঃ মহামহােপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, নেপালের রাজগ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদের পুথিটি আবিষ্কার করেন। 
৫) কত খ্রিস্টাব্দে চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয়?
উঃ ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয়।
৬) চর্যাপদ’-এর পদের সংখ্যা কত? কতজন কবি এই পদগুলি লিখেছেন?
উঃ চর্যাপদ’-এর পদের সংখ্যা ৫০। ২৪ (চব্বিশ) জন কবি এই পদগুলি লিখেছেন। 
৭) চর্যাপদ'-এর ভাষা যে বাংলা, তা কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন?
উঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন যে, 'চর্যাপদ'-এর ভাষা বাংলা। 
৮) চর্যাপদ’-এর তিব্বতি অনুবাদ কে আবিষ্কার করেন? কোন্ অবাঙ্গালি পণ্ডিত চর্যাপদ’ নিয়ে গবেষণা করেন?  
উঃ প্রবােধচন্দ্র বাগচি ‘চর্যাপদ’-এর তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন। অবাঙালি পণ্ডিত রাহুল সংকৃত্যায়ন চর্যাপদ’ নিয়ে গবেষণা করেন।
৯) চর্যাপদ’-এর প্রথম পদটির কবি কে? চর্যাপদ’-এ কার রচিত পদের সংখ্যা সর্বাধিক? 
উঃ চর্যাপদ’-এর প্রথম পদটির কবি হলেন লুইপাদ। চর্যাপদ’-এ কাহ্নপাদ রচিত পদের সংখ্যা সর্বাধিক ।
১০) চর্যাপদ’-এ বর্ণিত ডােমদের ও কাপালিক দের বৃত্তি কী কী ছিল? 
উঃ ‘চর্যাপদ’-এ বর্ণিত ডােমদের বৃত্তি ছিল তাঁত তৈরি, চাঙ্গারি বােনা, নৌকা বাওয়া এবং নাট্যাভিনয়।
১১) চর্যাপদ কোন্ ছন্দে লেখা? অন্য কোন্ ভাষায় এই ছদ প্রচলিত ছিল?
উঃ ‘চর্যাপদ’ প্রধানত পাদাকুলক ছন্দে লেখা তবে কয়েকটি পদে দোহা ও চউপাইআ ছন্দের প্রভাব আছে। প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় এই ছন্দ প্রচলিত ছিল।
১২) চর্যাপদ’-এ ব্যবহৃত ভাষা কী নামে প্রচলিত? কে এই নামকরণ করেন? 
উঃ চর্যাপদ’-এ ব্যবহৃত ভাষা সন্ধ্যাভাষা নামে প্রচলিত। মহামহােপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এই নামকরণ করেন।
১৩) চর্যাপদ’-এর পুথি-আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কটি পদ আবিষ্কার করেছিলেন? চর্যাপদের সংখ্যা কত?
উঃ হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ৪৬টি পূর্ণ পদ এবং ১টি অপূর্ণ বা অসমাপ্ত পদ অর্থাৎ সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ আবিষ্কার করেছিলেন। চর্যাপদ’-এর মােট সংখ্যা পঞ্চাশ।
১৪) চর্যাপদ’-এর টীকার তিব্বতি অনুবাদের কবি কে? কে সেই পুথি আবিষ্কার করেন?
উঃ ‘চর্যাপদ’-এর টীকার তিব্বতি অনুবাদের কবি হলেন কীর্তিচন্দ্র। ড. প্রবােধচন্দ্র বাগচি সেই পুথি আবিষ্কার করেন।
১৫) চর্যাপদ’-এর টীকা কী নামে পরিচিত ? চর্যাপদ’-এর প্রকৃত নাম কী?
উঃ ‘চর্যাপদ’-এর সংস্কৃত ভাষায় লেখা টীকাটি ‘নির্মলগিরি টীকা’ নামে পরিচিত। চর্যাপদ’-এর প্রকৃত নাম ‘চর্যাগীতিকোষ।
১৬) চর্যাপদ’-এর পদকর্তাদের কী নামে অভিহিত করা হয় ?
উঃ 'চর্যাপদ’-এর পদকর্তাদের সিদ্ধাচার্য নামে অভিহিত করা হয়। 
১৭) বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন কোনটি? এটি কোন্ সময়ে লিখিত ?
উঃ বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন হল ‘চর্যাপদ।  নবম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী কোনাে এক সময়ে লিখিত হয়েছিল চর্যাপদের কবিতাগুলি।

Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box