টীকা লেখ : ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস্ পার্টি
ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্ট স্পার্টি
ভূমিকা : ভারতীয়
কমিউনিস্টদের পক্ষে খােলাখুলিভাবে কাজ করা অনেক ক্ষেত্রেই ছিল অসুবিধাজনক। তাই শ্রমিক-কৃষকের
স্বার্থে জাতীয় কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই এই দল গড়ে ওঠে। জাতীয় কংগ্রেসের এই আন্দোলনের
প্রতি পরোক্ষ সহানুভূতি ছিল।
প্রতিষ্ঠা: ১৯২৫ সালে
কলকাতায় ‘লেবার স্বরাজ পার্টি অফ দি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস’ নামে এই রাজনৈতিক
দল গড়ে ওঠে।
নাম পরিবর্তন: ১৯২৮ সালে
কলকাতায় এই দলের সর্বভারতীয় সম্মেলনে এর নতুন নামকরণ হয়, ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস
পার্টি। দলের সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন আর, এস. নিম্বকার।
নেতৃবৃন্দ: এই দলের
নেতৃত্বের অধিকাংশই ছিলেন জাতীয় কংগ্রেসের কাজকর্মের প্রতি বীতশ্রদ্ধ। এদের মধ্যে
কুতুবুদ্দিন আহম্মেদ, কাজী নজরুল ইসলাম, গোপেন চক্রবর্তী, নলিনী গুপ্ত প্রমুখ ছিলেন
বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
উদ্দেশ্য: ‘ওয়ার্কার্স
অ্যান্ড পেজেন্ট স্পার্টি’গড়ে উঠেছিল শ্রমিকদের কাজের সময়সীমাহ্রাস,
সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ, জমিদারি প্রথার অবসান ঘটানো, শ্রমিক শ্রেণির আর্থ-সামাজিক
উন্নতি সাধন, তাদের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার জাগরণ ঘটানো প্রভৃতির উদ্দেশ্যে।
কাজী নজরুল ইসলাম, মুজাফফর আহমেদ প্রমুখের উদ্যোগে লাঙল ও ‘গণবাণী পত্রিকাকে মুখপত্র
করে প্রাথমিকভাবে কংগ্রেসের মধ্যে থেকে ও পরবর্তীতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত
থেকে শ্রমিক-কৃষক শ্রেণির স্বার্থরক্ষা করতে চেয়েছিল এই প্রতিষ্ঠান।
প্রসার : প্রাথমিকভাবে
কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হলেও অচিরেই এই দলের সর্বভারতীয় প্রকাশ ঘটে। বোম্বাই, উত্তরপ্রদেশ,
পাঞ্জাব প্রভৃতি স্থানে এর শাখা স্থাপিত হয় এবং শ্রমিক কৃষকদের স্বার্থে জোরদার আন্দোলন
শুরু হয়। মূল্যায়ন : জাতীয় আন্দোলনে জাতীয় কংগ্রেসের মূল ধারার পাশাপাশি ‘ওয়ার্কার্স
অ্যান্ড পেজেন্টস্ পার্টি’ দীর্ঘদিন একই সঙ্গে পথ হেঁটেছে বহুদূর। এদের প্রচেষ্টাতেই
প্রাথমিকপর্বে সংঘবদ্ধ কৃষক-শ্রমিক আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল ভারতের বুকে।