“কেননা ভবিষ্যতকে মানলেই তার জন্য যত ভাবনা, ভূতকে মানলে কোন ভাবনাই নেই”- কোন প্রসঙ্গে এই কথাটি বলা হয়েছে? ভূতকে মানলে ভাবনা নেই কেন? উদ্ধৃত অংশটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা
‘কর্তার ভূত’ গল্প থেকে
উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে। বুড়ো কর্তা যখন মরণাপন্ন হলো তখন দেশের সবাই বলে উঠেছিল
‘তুমি গেলে আমাদের কি দশা হবে?’ কর্তাও মনে মনে ভেবেছিলো যে তার মৃত্যুর পর দেশবাসীর
অভিভাবক কে হবে। শেষ পর্যন্ত দেবতার দয়ায় একটা উপায় হয়েছিল। বুড়ো কর্তা যাতে মারা যাওয়ার
পরও ভূত হয়ে দেশবাসীর ঘাড়ে চেপে থাকে সেই ব্যবস্থা করা হল। দেশবাসীও নিশ্চিন্ত হল।
এই প্রসঙ্গেই কথাটি বলা হয়েছে। বুড়ো কর্তা
মারা গেলে তাদের ভবিষ্যৎ কি হবে সেটাই দেশের লোকের প্রধান চিন্তা হয়ে ওঠে। আসলে এই
দেশবাসী ভীতু, রক্ষণশীল এবং আত্মমর্যাদাহীন। নতুন কিছুকে গ্রহন করার সাহস এবং ক্ষমতা
তাদের নেই। লেখক বলেছেন- ‘ভবিষ্যতকে মানলেই তার জন্য যত ভাবনা, ভুতকে মানলে কোন ভাবনাই
নেই’। কারণ, ভুতকে মানলে স্বাভাবিকভাবেই সব ভাবনা ভুতের মাথায় চাপে।
কিন্তু, ভুতের মাথা নেই তাই কারো জন্য তার মাথাব্যথাও নেই। আসলে ভুত হল অজ্ঞতা, ভবিষ্যৎ হল জ্ঞান। ভবিষ্যৎকে
মানতে হলে অন্ধবিশ্বাস, অজ্ঞতা ও রক্ষণশীলতাকে বিসর্জন দিয়ে নতুন করে সবকিছু ভাবতে
হবে। কিন্তু দেশবাসী এই পরিবর্তন চায় না। তাই লেখক এই কথাগুলি বলেছেন।