ইলিয়াস চরিত্রটি বিশ্লেষণ করাে।
উঃ ইলিয়াস’ গল্পের প্রধান চরিত্র ইলিয়াস। তাকে ঘিরেই গল্পের কাহিনি পরিণতি লাভ করে। উফা প্রদেশের বাসিন্দা ইলিয়াস ছিল বাকির জনগােষ্ঠীভুক্ত। পিতার মৃত্যুর পর সে দিনরাত পরিশ্রম করে আর বুদ্ধি খাটিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। তার পরিশ্রমের কথা বলতে গিয়ে লেখক জানাচ্ছেন সে আর তার স্ত্রী সবার আগে ঘুম থেকে ওঠে আর সবার শেষে ঘুমােতে যায়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে। ইলিয়াস দিনে দিনে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়ে ওঠে। দূর-দূরান্তে অতিথিদের সঙ্গে তার পরিচিতির মাত্রাও বেড়েছিল। অতিথিবৎসল ইলিয়াস সবাইকে সন্তুষ্ট রেখেছিল—
ক) ইলিয়াস অতিথিদের ভােজ্য-পানীয় দিয়ে স্বাগত জানাত।
খ) যে যখনই আসুক কুমিস, চা, শরবত আর মাংস সব সময়েই হাজির।
গ) অতিথি এলেই এক বা দু’টো ভেড়া মারা হতাে। সর্বস্ব খুইয়ে ইলিয়াস যখন সর্বহারা তখন মহম্মদ শা তাকে আশ্রয় দেয়। ইলিয়াস সাধ্যমতাে শ্রম দিয়ে মহম্মদ শা-র সেবা করত। ইলিয়াস ছিল বাস্তববাদী। সে বিগত দিনের জন্য বিলাপ করে না। এই উপলব্ধির কথা সকলকে অকুণ্ঠচিত্তে জানাতে দ্বিধা করে না। ধনী ইলিয়াস ঈশ্বরকে স্মরণ করার সময় পায়নি। কিন্তু আজ সর্বস্ব হারিয়ে সে সেই ঈশ্বরের পদে অবিচল ভক্তি রাখতে পেরেছে এবং ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় ইলিয়াস যেভাবে জীবনের সত্য উপলব্ধি করতে পেরেছে তার জন্য পরম করুণাময়ের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। এই গুণাবলির নিরিখে ইলিয়াস’ চরিত্রটি হয়ে উঠেছে সর্বাঙ্গসুন্দর।