শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনকাহিনি সংক্ষেপে লেখাে ।
উত্তরঃ
● চৈতন্য জীবনকাহিনি : ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দের ফাল্গুনী দোলপূর্ণিমার সন্ধ্যায় মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জগন্নাথ মিশ্র, মাতা শচীদেবী। গাত্রবর্ণ গৌর ছিল বলে তাকে গৌরাঙ্গ বা গােরা বলেও ডাকা হত। সন্ন্যাসগ্রহণের পর তার নাম হয় শ্রীচৈতন্য বা শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য।
নিমাইয়ের বয়স যখন ষােলাে-সতেরাে বছর তখন লক্ষ্মীদেবীর সঙ্গে তার বিবাহ হয়। কিছুকাল পরে তিনি পূর্ববঙ্গ পরিভ্রমণে যান এবং ফিরে এসে সর্পাঘাতে লক্ষ্মীদেবীর মৃত্যুর খবর শােনেন। মায়ের অনুরােধে দ্বিতীয়বার তিনি বিবাহ করেন বিষ্ণুপ্রিয়াকে। আনুমানিক তেইশ বছর বয়সে পিতার পিণ্ডদান উপলক্ষ্যে গয়ায় যান। সেখানে ঈশ্বরপুরীর সান্নিধ্যে এসে তার কাছে দীক্ষাগ্রহণ করেন। তখন থেকেই নিমাইয়ের জীবনে বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটে। নবদ্বীপে ফিরে এসে টোল চতুম্পাঠী ছেড়ে হরিভক্তদের নিয়ে তিনি কৃষ্ণনাম সংকীর্তনে মত্ত হয়ে ওঠেন। তাঁর মধ্যে বৈরাগ্য এত প্রবল হয়ে ওঠে যে তিনি কাটোয়ার কেশব ভারতীর কাছে সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষা নিয়ে সংসারের মায়া ত্যাগ করেন। তার নতুন নাম হল ‘শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য'। এরপর শান্তিপুরে কয়েকদিন বাস করার পর তিনি চারজন সঙ্গী নিয়ে পুরীর দিকে যাত্রা করেন। বাংলায় বৈষ্ণবধর্ম প্রচারের ভার দিয়ে যান অদ্বৈত আচার্য এবং নিত্যানন্দের ওপর। পুরীতে কিছুদিন অবস্থান করে তিনি ভারতের বিভিন্ন তীর্থ পর্যটনে যান। পরিক্রমা শেষে আবার ফিরে আসেন পুরীতে। তার জীবনের অবশিষ্ট দিনগুলি পুরীতেই অতিবাহিত হয়। এই সময় বিভিন্ন স্থানে তার অগণিত ভক্ত সম্প্রদায় গড়ে ওঠে। তিনি পুরীতে অবস্থান করলেও বাংলা দেশের ভক্তগণ তার সঙ্গে নিয়মিত যােগাযােগ রাখতেন। |
সন্ন্যাসগ্রহণের পর আঠারাে বছর পুরীতে কাটিয়ে ১৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইহলােক ত্যাগ করেন। তার জীবনাবসানের বিষয়টি এখনও রহস্যাবৃত।