“তেমনি করেই সূর্য ওঠে, তেমনি করেই ছায়া” – কীভাবে সূর্য ওঠে? ‘তেমনি করেই’ সূর্য ওঠা ও ছায়ার তাৎপর্য নির্দেশ করাে।
উঃ কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ‘আবহমান’কবিতায় বলতে চেয়েছেন বিদেশে থাকা মানুষগুলি আগে তাদের মায়ের কাছে নিশ্চিন্তে দিন কাটাবার সময় যেভাবে সূর্য উঠত, আজও তারা গ্রাম ছেড়ে অনেক দূর চলে যাবার এতদিন পরে সেই একইরকমভাবে সূর্য ওঠে। গ্রামের বাড়িতে থাকা জননী সবসময় মূহ্যমান প্রতীক্ষায় থাকেন আর থাকেন সন্তানের আগমনের আশায়। শহরবাসী ছেলে যখন গ্রামে বসবাস করত, এমনকী ছােটোবেলায় তার প্রকৃতি কেমন ছিল, কীভাবে এখন সে দিন যাপন করছে – এই সমস্ত কথা যখন মায়ের স্মৃতিতে ভেসে ওঠে, তখন মা অত্যন্ত বেদনাহত হয়ে পড়েন। অতীতের সঙ্গে বর্তমানের যােগসূত্র টানতে ‘তেমনি’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
আসলে সূর্য যেমন সত্য, তেমনি তার পাশাপাশি অন্ধকারও সত্য। সন্তানকে কাছে না পাবার জন্য মায়ের হৃদয় ব্যাকুল হয়ে ওঠে, তখনই যেন তার জীবনে ছায়া নেমে আসে। আবার সন্তানের শৈশবের স্মৃতি মা যখন তার বাড়ির চারপাশে খুঁজে বেড়ান তখন মায়ের মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে এই উজ্জ্বলতা সূর্যের আলাের উজ্জ্বলতারই প্রতিরূপ। আসলে আমাদের জীবনে যে আলাের পাশাপাশি অন্ধকার বিরাজ করছে সেই গভীর সত্যটিকে কবি দুঃখিনী মায়ের মধ্যে উদ্ভাসিত করেছেন।