“এই খেয়া চিরদিন চলে নদীস্রোতে” – এই পঙক্তিটির মধ্য দিয়ে কবি কী বােঝাতে চেয়েছেন আলােচনা করাে।

উঃ মানবতাবাদী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘খেয়া’ কবিতা থেকে নেওয়া আলােচ্য “এই খেয়া চিরদিন চলে নদীস্রোতে” অংশে গ্রামবাংলার শাশ্বত শান্ত-স্নিগ্ধ রূপটি ফু
“এই খেয়া চিরদিন চলে নদীস্রোতে” – এই পঙক্তিটির মধ্য দিয়ে কবি কী বােঝাতে চেয়েছেন আলােচনা করাে।

উঃ মানবতাবাদী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘খেয়া’ কবিতা থেকে নেওয়া আলােচ্য “এই খেয়া চিরদিন চলে নদীস্রোতে” অংশে গ্রামবাংলার শাশ্বত শান্ত-স্নিগ্ধ রূপটি ফুটে উঠেছে। 
আলােচ্য অংশে কবি দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় নাগরিক জীবন ও সহজ-সরল, শান্তিপ্রিয় গ্রামজীবনের ছবি পাশাপাশি তুলে ধরেছেন। এখানে বর্ণিত নদী ও নদীর তীরবর্তী দু'টি গ্রামের কোনাে নাম না থাকলেও এরা গােটা বাংলার পল্লিজীবনের প্রতীক। নগরের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের ছোঁয়া এখানে লাগেনি। কিন্তু পরস্পরের সঙ্গে ভাব-ভালােবাসার এক অকৃত্রিম বন্ধন রয়েছে। এখানে। আর দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে এই বন্ধনটাকে আরও দৃঢ় করছে খেয়ানৌকাটি। নগরের মানুষ সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকলেও তাদের মধ্যে আত্মার যােগসূত্র কম। আরও চাই, আরও চাই এই বাসনায় শহরের মানুষ একে অন্যের বিরুদ্ধে তৎপরতা দেখায়। এভাবে বাড়তে থাকে বিরােধ যা একসময় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের রূপ নেয়ধর্জেক সাম্রাজ্যের পতনের পর আরেক সাম্রাজ্য গড়ে ওঠে। নগরজীবন আরও জটিল হয়, হারিয়ে যায় মানবিক সম্পর্ক ও প্রকৃতির শ্যামলিমা। নগরজীবনে মানুষ একদিন হৃদয়হীন হয়ে যায়। কিন্তু পল্লিগ্রামে এসবের স্পর্শ লাগে না। আসলে নগরজীবনের উত্থান-পতনের ঢেউ পল্লির মাঠে, ঘাটে, জীবনে এসে আঘাত করতে পারে না।

একই ছন্দে আবহমান কাল ধরে গ্রামের জীবনধারা প্রবহমাণ। ফলে নদীর দুই পাড়ের গ্রাম দু’টি আজও একে অন্যের দিকে চেয়ে সুখ-দুঃখের কথা, ভালােবাসার বন্ধনের বিষয়ে আলােচনা করে। মাঝে খেয়ানৌকা দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করে।
Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box