‘তারা ভয়ংকর সজাগ আছে।'—কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের এমন সজাগ থাকার কারণ কী?
উত্তর:
কাদের কথা : ‘কর্তার ভূত’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত হয়েছে। ভূততন্ত্রে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষ বিশ্বাস করেনি। তারা অত্যন্ত সচেতন। তারা যুক্তিবাদী। এখানে সেই যুক্তিবাদীদের কথা বলা হয়েছে।
সজাগ থাকার কারণ : গল্পের তৃতীয় অনুচ্ছেদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘ভূতশাসনতন্ত্র নিয়ে কারও মনে দ্বিধা জাগত না।' যার ভূতশাসনতন্ত্রে আস্থা রাখে, তারা কুসংস্কারাচ্ছন্ন। তারা ভীত মানুষ। তাদের ভবিষ্যৎ লেখকের ভাষা অনুসারে ‘পোষা ভেড়ার মতো।' সে ভবিষ্যৎ উদ্দেশ্যহীন, নিরর্থক। ফলে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের থেকে তারা বঞ্চিত হয়।
- দেশের অধিকাংশ মানুষ ‘কর্তার ইচ্ছায় কর্ম’ বিষয়টিকে মেনে নিয়েছিলেন। তাদের মাথার উপরে ধর্মীয় নেতা, রাজনৈতিক নেতা, ব্রিটিশ সরকার— প্রত্যেকেই প্রভাব বিস্তার করত। অথচ তারা প্রতিবাদ করত না। তারা ভাবত, কর্তা যখন রয়েছেন তখন কিছু না কিছু ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এই অনিশ্চিত ভবিষ্যতে বিশ্বাসী মানুষদের ভুল ভাঙাতে চেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কেননা, তিনি দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেছেন, বিশ্বের এমন অনেক দেশ আছে যারা ভূতগ্রস্ত নয়। অথচ সেখানে দিব্য উন্নতির ঘোড়া দৌড়ে চলেছে। তারা অতীতের ভূতে বিশ্বাস করে না। এমনকী কোনো অন্ধ সংস্কারাচ্ছন্নতায় বিশ্বাসী নয়। ফলে তাদের সেই রথচক্র সচল বেগে চলেছে। লেখকের ভাষায় ‘মানুষ সেখানে একেবারে জুড়িয়ে যায়নি।'