বাংলা পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে ছাপাখানার উদ্যোগের পরিচয় দাও।

ভূমিকা: অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে বাংলায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ঊনবিংশ শতকের প্রথম ভাগের মধ্যে ছাপাখানার ব্যাপক প্রসার ঘটে। ছাপাখানাগুলিতে বিভিন্ন ধ

 উত্তর – বাংলা পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে ছাপাখানার উদ্যোগ

ভূমিকা: অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে বাংলায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ঊনবিংশ শতকের প্রথম ভাগের মধ্যে ছাপাখানার ব্যাপক প্রসার ঘটে। ছাপাখানাগুলিতে বিভিন্ন ধরনের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রিত হয়ে সেগুলি শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে যায়। যেমন—
  1. শিশুশিক্ষা-বিষয়ক বইপত্র: বাংলার ছাপাখানাগুলিতে শিশুশিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষার প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বই ছাপা হয়। এইসব বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মদনমোহন তর্কালঙ্কার রচিত ‘শিশুশিক্ষা’, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত ‘বর্ণপরিচয়’, রামসুন্দর বসাক রচিত ‘বাল্যশিক্ষা’ প্রভৃতি। এইসব বই থেকেই বাংলার শিশুরা বাংলা বর্ণের সঙ্গে পরিচিত হয়।
বাংলা পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে ছাপাখানার উদ্যোগের পরিচয় দাও।

  1. বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যবই: শিশুশিক্ষার বই ছাড়াও ছাপাখানাগুলিতে বিদ্যালয় স্তরের ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয় গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে প্রচুর পাঠ্যপুস্তক রচিত হয়। ঊনবিংশ শতকের এরূপ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বই হল গোবিন্দ প্রসাদ দাস রচিত ‘ব্যাকরণ সার’, প্রাণলাল চক্রবর্তী রচিত ‘অঙ্কবোধ’, কেদারেশ্বর চক্রবর্তী রচিত ‘বাঙ্গালার ইতিহাস’, আনন্দকিশোর সেন রচিত অর্থের সার্থকতা’, দীননাথ সেন রচিত ‘বাংলাদেশ ও আসামের সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং ‘ঢাকা জেলার ভূগোল এবং সংক্ষেপে ঐতিহাসিক বিবরণ’ প্রভৃতি।
  2. সহায়ক বইপত্র: ঊনবিংশ শতকে পাঠ্যপুস্তক ছাড়াও ছাপাখানার মালিকরা ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয় বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন সহায়ক বইপত্র প্রকাশ করতেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এইসব বইয়ের যথেষ্ট চাহিদাও ছিল।
উপসংহার: বাংলা ভাষায় শিক্ষাগ্রহণের জন্য পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পেলে ছাপাখানাগুলিতে বিপুল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। মুদ্রিত পাঠ্যবইগুলি বাংলার শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছালে শিক্ষার প্রসারে আরও গতি আসে।
Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box