শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কীভাবে একটি অগ্রণী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল?

ভূমিকা: ডেনমার্ক থেকে আগত শ্রীরামপুরের খ্রিস্টান মিশনারিরা নিজেদের, ধর্মীয় প্রচারসহ বেশকিছু জনকল্যাণমূলক উদ্দেশ্যে সেখানে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন।

ভূমিকা: ডেনমার্ক থেকে আগত শ্রীরামপুরের খ্রিস্টান মিশনারিরা নিজেদের, ধর্মীয় প্রচারসহ বেশকিছু জনকল্যাণমূলক উদ্দেশ্যে সেখানে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। এই ছাপাখানা প্রাচ্যের মুদ্রণশিল্পে গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা করে।

  1. ছাপাখানা স্থাপন : শ্রীরামপুর মিশনের খ্রিস্টান মিশনারি উইলিয়ম কেরি ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে একটি ছাপাখানা স্থাপন করেন যা এশিয়ার সর্ববৃহৎ এবং বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছাপাখানা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
  2. শ্রীরামপুর ত্রয়ীর উদ্যোগ : শ্রীরামপুর মিশনের উইলিয়াম কেরি, জোশুয়া মার্শম্যান এবং উইলিয়াম ওয়ার্ড (শ্রীরামপুর ত্রয়ী) এর উদ্যোগে বাংলায় গণশিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটে। ১৮০১-১৮৩২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে শ্রীরামপুরের ছাপাখানা থেকে ৪০টি ভাষায় ২ লক্ষেরও বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।
  3. অনুবাদ প্রকাশ : শ্রীরামপুরের ছাপাখানা থেকে বাংলা, হিন্দি, অসমিয়া, উড়িয়া, মারাঠি, সংস্কৃত প্রভৃতি ভারতীয় ভাষায় বাইবেল, রামায়ণ, মহাভারত প্রভৃতির অনুবাদ ছাপা হয়।
  4. অন্যান্য ছাপার কাজ : ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ছাত্রদের জন্য পাঠ্যপুস্তক, রামরাম বসুর ‘প্রতাপাদিত্য চরিত্র, বিভিন্ন সংবাদপত্র প্রভৃতিও শ্রীরামপুরের ছাপাখানা থেকে ছাপা হয়।
  5. দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সুবিধা : শ্রীরামপুর মিশনের ছাপাখানা থেকে প্রচুর বাংলা পাঠ্যপুস্তক প্রকাশের ফলে সাধারণ মানুষের হাতে খুব কম দামে বা বিনামূল্যে বই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। ফলে গ্রাম-বাংলার দরিদ্র শিক্ষার্থীরা শিক্ষালাভের সুযোগ পায়।
উপসংহারঃ শ্রীরামপুরের ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ফলে মুদ্রিত বইয়ের দাম জনসাধারণের নাগালে চলে আসে। এর ফলে যে শিক্ষা শুধুমাত্র সমাজের উচ্চবর্ণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল তা ক্রমে সর্বসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box