জাতীয় স্বার্থের শ্রেণিবিভাজন করো।

উত্তর জাতীয় স্বার্থের শ্রেণিবিভাজন : আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্যতম মুখ্য ধারণা হল জাতীয় স্বার্থ। টমাস রবিনসনকে অনুসরণ করে জাতীয় স্বার্থকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা যায়। এই ভাগগুলি হল-

1) মুখ্য জাতীয় স্বার্থ : যে সমস্ত স্বার্থরক্ষা করাকে প্রতিটি জাতি আবশ্যিক কর্তব্য বলে বিবেচনা করে তাকে মুখ্য জাতীয় স্বার্থ বলে। যেমন—প্রাকৃতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিদেশি শক্তির দ্বারা আক্রান্ত হলে মুখ্য জাতীয় স্বার্থ তাকে রক্ষা করে।

2) গৌণ জাতীয় স্বার্থ : একটি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ না হলেও এমন কিছু স্বার্থ থাকে যাকে রক্ষা করা রাষ্ট্রের কর্তব্য, সেই ধরনের স্বার্থকে গৌণ জাতীয় স্বার্থ বলে। যেমন— প্রবাসী নাগরিকদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং কূটনৈতিক কাজে নিযুক্ত কর্মী এবং তাঁদের পরিবার পরিজনকে সুযোগসুবিধা প্রদান ও রক্ষা করা প্রভৃতি এইরূপ জাতীয় স্বার্থের অন্তর্ভুক্ত।

3) স্থায়ী জাতীয় স্বার্থ: স্থায়ী জাতীয় স্বার্থ দীর্ঘমেয়াদী ও অপরিবর্তনীয়, পরিবর্তন হলেও তা ধীরগতিতে হয়। দৃষ্টান্তস্বরূপবাণিজ্যের স্বার্থে ব্রিটেন বিগত বেশ কিছু শতক ধরে সমুদ্রে অবাধে নৌ-চলাচলের স্বাধীনতার পক্ষে সক্রিয় হয়েছে।

4) পরিবর্তনীয় জাতীয় স্বার্থ : একটি জাতির যে-সমস্ত স্বার্থ কোনো বিশেষ পরিস্থিতিতে জাতীয় কল্যাণের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ বলে গণ্য হয়, সেগুলিকে পরিবর্তনীয় জাতীয় স্বার্থ বলে। মূলত সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের জাতীয় স্বার্থের পরিবর্তন ঘটে।

5) সাধারণ জাতীয় স্বার্থ : সাধারণ জাতীয় স্বার্থ বলতে কতকগুলি ইতিবাচক শর্তকে বোঝায়। এই সমস্ত শর্তগুলি বহু ও বিভিন্ন জাতির স্বার্থে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক প্রভৃতি বহুবিধ ক্ষেত্রে সমভাবে প্রয়োগ করা হয় ।

6) সুনির্দিষ্ট জাতীয় স্বার্থ : সাধারণ জাতীয় স্বার্থের যুক্তিসংগত সম্প্রসারণ হিসেবে সুনির্দিষ্ট জাতীয় স্বার্থের কথা বলা হয়। স্থান ও সময়ের ভিত্তিতে এইরূপ জাতীয় স্বার্থ নির্ধারিত হয়। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, নতুন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্বের অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষার প্রয়াস।
Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box