'সেই মেয়েটির মৃত্যু হল না” – মেয়েটির পরিচয় দাও । তার মৃত্যু না-হওয়ার মধ্য দিয়ে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ? 'সেই মেয়েটির মৃত্যু হল না।'—কোন্ মেয়েটির কথা বলা হয়েছে ? তার মৃত্যু না-হওয়ার কারণ কী ?
উত্তর : প্রখ্যাত চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদা রচিত ‘অসুখী একজন’ কবিতায় বর্ণিত মেয়েটি হল কথকের প্রিয়তমা !
তাঁর মৃত্যু না-হওয়া প্রসঙ্গে কবির বক্তব্য | কবিতার কথক অর্থাৎ কবি চরম অতৃপ্তি নিয়ে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। কিন্তু তাঁর প্রিয় নারী তাঁর অপেক্ষায় থাকে, কেন-না সে জানে না যে, তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না। কবিতার শেষ পর্যন্ত এই অপেক্ষাকেই আমরা দেখেছি। সময় অতিক্রান্ত হয়, আবছা হয় স্মৃতি, অপেক্ষার বছরগুলো ভারী হয়। কবি তাই বলেন— 6 বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল আমার পায়ের দাগ
ঘাস জন্মালো রাস্তায়।
আর কথকের প্রিয়তমা নারীর মাথার উপর দিয়ে বছরগুলো পেরিয়ে গেল। 6 আর একটার পর একটা, পাথরের মতো
পর পর পাথরের মতো, বছরগুলো
নেমে এল তার মাথার ওপর।
অর্থাৎ পাথরের মতো ভারী, গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রণায় সেই অপেক্ষায় থাকা নারীর দিন কাটে। এরপর আসে যুদ্ধ। সমতলে আগুন ধরায়। ধ্বংস হয় মানুষের স্বপ্নের আশ্রয়; রক্ষা পায় না শিশুরাও। দেবালয়, শহর— সব কিছু ধ্বংস হওয়া সত্ত্বেও অতৃপ্ত হৃদয়ে সেই মেয়েটি অপেক্ষার আলোকশিখা দু-হাত দিয়ে আড়াল করে দাঁড়িয়ে থাকে। অন্যদিকে কথকও অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে ফিরে আসতে চান তাঁর প্রতীক্ষমাণা ভালোবাসার কাছে। সব কিছু ধ্বংসের মাঝেও কবির হৃদয়ে অপেক্ষরতা নারীটির মৃত্যু নেই। চিরায়ত অতৃপ্ত মানবীটিই এই নারী। কবির অতৃপ্ত মন তার কাছে বারবার ফিরে যেতে চায়। তার মৃত্যু না-হওয়ার মধ্য দিয়ে স্পষ্টতই কবিতাটিতে কবি যুদ্ধবিরোধী মনোভাব নিয়ে বিশ্বশান্তির বার্তা প্রেরণ করেছেন পাঠকের