দ্বিপদ নামকরণ বলতে কী বোঝ ও কে এই নামকরণ প্রচলন করেন? দ্বিপদ নামকরণের নিয়মগুলি লেখো ।
∆ দ্বিপদ নামকরণ ‘গণ” এবং “প্রজাতি’ নামক দুটি পদের সমন্বয়ে জীবদের যে বিজ্ঞানভিত্তিক নামকরণ করা হয়, তাকে দ্বিপদ নামকরণ বলে ।
∆∆ দ্বিপদ নামকরণের প্রবক্তা
দ্বিপদ নামকরণের প্রবক্তা হলেন বিখ্যাত সুইডিশ প্রকৃতিবিদ ক্যারোলাস লিনিয়াস | তিনি উদ্ভিদের সমস্ত যুক্তিপূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত নাম তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘স্পিসিস প্লান্টেরাম' (Species Plantarum)-এ 1753 সালে লিপিবদ্ধ করেন। এ ছাড়া, তিনি প্রাণীদের সমস্ত যুক্তিপূর্ণ নাম তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “সিস্টেমা ন্যাচুরি' (Systema Naturae)-তে লিপিবদ্ধ করে 1758 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশ করেন।
∆∆∆ দ্বিপদ নামকরণের নিয়মাবলি
লিনিয়াসের ধারণার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীকালে নামকরণের বিশ্বসংস্থাগুলি (ICBN, ICZN প্রভৃতি) দ্বিপদ নামকরণের নিয়মগুলি নির্ধারণ করেছে। এগুলি হল
১) প্রতিটি জীবের একটি নির্দিষ্ট বিজ্ঞানসম্মত নাম থাকবে, যার দুটি পদ থাকবে—গণের নাম এবং প্রজাতির নাম।
২) ইংরেজিতে এই গণের এবং প্রজাতির নাম তিনটি বর্ণের কম ও বারোটি বর্ণের বেশি হবে না।
৩) গণের নামটি প্রথমে লেখা হবে। এটি হল নামপদ বা বিশেষ্য। এর প্রথম বর্ণটি বড়ো হাতের হবে।
৪) গণের নামের পরে প্রজাতির নাম লেখা হবে। প্রজাতির প্রথম বর্ণটি ছোটো হাতের হবে।
৫) বিজ্ঞানসম্মত নামটির শেষে আবিষ্কারকের নামটি দ্বিপদ বিজ্ঞানসম্মত নামের পরে লেখা হবে।
৬) বিজ্ঞানসম্মত নাম বাঁকা হরফে (italics) লেখা হয় | হাতে লিখলে গণ ও প্রজাতির নীচে আলাদা ভাবে দাগ দিতে হবে।
৭) যখন একটি জীব বিভিন্ন আবিষ্কারক দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন নামাঙ্কিত হয়, তখন সর্বপ্রথম যিনি নামকরণ করেন, তাঁর দেওয়া নামটিই গৃহীত হবে। একে অগ্রাধিকার সূত্র বা পূর্বিতার আইন (Law of priority) বলে ।