শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি কে আবিষ্কার করেছিলেন? কাব্যটি কোথা থেকে পাওয়া গিয়েছিল? কাব্যটির রচনাবৈশিষ্ট্যের পরিচয় দাও।
● ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি আবিষ্কার করেছিলেন বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ। ঞ্জি ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বাঁকুড়া জেলার কাঁকিল্যা গ্রামের অধিবাসী দেবেন্দ্রনাথ মুখােপাধ্যায়ের গােয়ালঘরে “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন' কাব্যের পুথিটি পাওয়া গিয়েছিল।
● বড়ু চণ্ডীদাসের ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ রাধাকৃয়ের প্রণয়লীলাকে অবলম্বন করে লেখা আখ্যানকাব্য, যার বিন্যাসে আছে নাটকীয়তা, অন্তরে গীতিময়তা।
● ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের ভাষা প্রথমযুগের বাংলা ভাষা হলেও চর্যাপদের ভাষার আড়ষ্টভাব অনেকখানিই অতিক্রম করতে পেরেছিল এই ভাষা। ভাগবত পুরাণ এবং গীতগােবিন্দম্ কাব্যের বহু শ্লোকের ভাবানুবাদ বড়ু চণ্ডীদাস ব্যবহার করেছেন তাঁর শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে। আদিমধ্যযুগে সৃষ্টি হওয়া নব্য বাংলার বিশিষ্ট লক্ষণগুলাে (সর্বনামে কর্তৃকারকে রা’ বিভক্তি যােগ, ভবিষ্যতের কর্তৃবাচ্যে ইষ্ট অন্তঃক্রিয়ার ব্যবহার ইত্যাদি) এতেই আমরা পাই। সংস্কৃত অলংকার শাস্ত্রের অনুসরণে বড় চণ্ডীদাস তাঁর কাব্যে উৎপ্রেক্ষা, উপমা, রূপক, প্রভৃতি অলংকারের প্রয়ােগ ঘটিয়েছেন। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটি ছন্দ ব্যবহারেও প্রশংসাহ। সাত প্রকার পয়ার ও তিন প্রকার ত্রিপদীর ব্যবহার লক্ষ করা যায় শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে ---
“হইএ আত্মে গােপ জাতী পতি ছাড়ী নাহি গতী
ঘৃতে দুধে সাজি-এ পারে।” (ত্রিপদী)
সুতরাং, রচনাবৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বড় চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্য যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে।