নারী ইতিহাসের উপর একটি টীকা।
উত্তর: সাবেক ইতিহাসে উপেক্ষিত নারী সমাজের ভূমিকার পুনর্মূল্যায়ন আধুনিক ইতিহাসচর্চার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
নারী
ইতিহাসচর্চা
গবেষণা: পাশ্চাত্যে
নারীবাদী ইতিহাসচর্চার ধারা অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে সূচিত হলেও ভারতের মতন দেশে
এই চর্চা অপেক্ষাকৃত নবীন। ভারতে নারীবাদী ইতিহাস নিয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন নীরা
দেশাই, বি. আর. নন্দা, মালবিকা কালেকর প্রমুখ।
পুরুষকেন্দ্রিক ইতিহাসের সংশোধন: প্রচলিত
ইতিহাসে নারীর ভূমিকা সর্বদাই প্রান্তিক। সেই প্রান্তিকতা থেকে সরে এসে ইতিহাসে নারীর
ভূমিকার প্রকৃত মূল্যায়ন নারীবাদী ইতিহাসচর্চার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বস্তুতপক্ষে নারীবাদী
ইতিহাস হলো একধরনের সংশোধনবাদী ইতিহাসচর্চা।
নারীর অধিকার: সমতা প্রতিষ্ঠা
ও নারীর অধিকার এবং নারী-পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা নারীবাদী ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
নারীর অংশগ্রহণ: বিভিন্ন
সময়কালেসমাজেনারীর পরিবর্তিত অবস্থান,আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে নারীর ভূমিকা,
নারীর পোশাক, কর্মসংস্থান, ধর্ম-কর্ম-গার্হস্থ্য ও শিল্পোৎপাদন কর্মে নারীর অংশগ্রহণ
প্রভৃতিকে চিহ্নিত করা নারীবাদী ইতিহাসচর্চার মূল প্রতিপাদ্য।
সভ্যতার অগ্রগতির মাপকাঠি: যে নারী
‘অর্ধেক আকাশ’তথা শক্তির স্বরূপ, সেই নারীকে বাদ
দিয়ে কোনো সমাজ কোনো কালে অগ্রসর হতে পারে না। বস্তুতপক্ষে কোনো সমাজ বা সভ্যতায়
নারীর অবস্থান ও মর্যাদার উপর সেই সমাজের অগ্রসরতা বা পশ্চাগামীতা নির্ভর করে। তাই
নারী ইতিহাস হয়ে উঠেছে সভ্যতার অগ্রগতির মাপকাঠি।
মন্তব্য: ভারতবর্ষেনারীবাদী
ইতিহাসচর্চার ধারা অপেক্ষাকৃত নবীন হলেও বর্তমানে এর ক্ষেত্র অনেকটাই বিস্তৃত। আধুনিক
ভারতীয় সমাজে নারীর সর্বব্যাপী অধিকার ভারতীয় সমাজের অগ্রগতির যথার্থ মাপকাঠি।