পরিবেশের ইতিহাসচর্চার ওপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো ।

উত্তর: নতুন সামাজিক ইতিহাসের অন্যতম শাখারূপে পরিবেশের ইতিহাসচর্চা বর্তমানে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। গবেষণা ও পাশ্চাত্যে পরিবেশের ইতিহাসচর্চার ধারা

উত্তর: নতুন সামাজিক ইতিহাসের অন্যতম শাখারূপে পরিবেশের ইতিহাসচর্চা বর্তমানে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। গবেষণা ও পাশ্চাত্যে পরিবেশের ইতিহাসচর্চার ধারা সূচিত হয়েছে ১৯৬০-৭০-এর দশকে। র্যাচেল কার্সেনের সাইলেন্ট স্প্রিং, ‘দ্য সি অ্যারাউন্ড আস, আলফ্রেড ক্রসবির ইকোলজিকাল ইম্পিরিয়ালিজম, রিচার্ড গ্রোভের ‘গ্রিন ইম্পিরিয়ালিজম প্রভৃতি গ্রন্থ পরিবেশের ইতিহাসচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ মাইল ফলক। ভারতে এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন রামচন্দ্র গুহ, মাধব গ্যাডগিল প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ। 

মূল উপজীব্য: প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে যুগ যুগ ধরে মানব সভ্যতার প্রাত্যহিক সম্পর্কের কথাই পরিবেশের ইতিহাসের মূল উপজীব্য। পরিবেশের ইতিহাসচর্চা মানুষকে পরিবেশ সচেতন করে তোলে। মানুষের বিভিন্ন অবিবেচনা প্রসূত সিদ্ধান্ত এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অপব্যবহার কীভাবে পরিবেশের নিরন্তর ক্ষতিসাধন করে চলেছে, কীভাবে মনুষ্য-সৃষ্ট বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণ বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতার পতনের কারণ হয়েছে, তার সম্যক ধারণা দেয় পরিবেশের ইতিহাসচর্চা। সেই সঙ্গে বর্তমানের ছাত্র তথা ভাবীকালের নাগরিক সমাজের কাছে প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ ও সুব্যবহারের বার্তা দেয় পরিবেশের ইতিহাসচর্চা।  

পরিবেশ আন্দোলন: পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার প্রশ্নে বিশ্বের পরিবেশ সচেতন মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। বিশ্ব উন্নয়নের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব আজ সোচ্চার। ভারতে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে সুন্দরলাল বহুগুণার নেতৃত্বে সংঘটিত চিপকো আন্দোলন এবং ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে মেধা পাটেকরের নেতৃত্বে সংঘটিত নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন এ প্রসঙ্গে বিশেষ উল্লেখের দাবী রাখে।   

মন্তব্য: পরিবেশের ইতিহাস নিছক ইতিহাসের তত্ত্বকথা নয়, তা ভাবীকালের বিশ্ব মানব সমাজ রক্ষার একমাত্র খোলা পথ। 
Write Your HideComments
Cancel

Please Do Not Enter Any Span Link in The Comment Box