সিন্ধু সভ্যতার বিস্তার সম্পর্কে আলোচনা কর ।
সিন্ধু সভ্যতার বিস্তার:
প্রথমদিকে ধারণা করা হতাে, সিন্ধু নদীর তীরে এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। এ কারণেই সভ্যতাটির নাম দেয়া হয়েছিল সিন্ধু সভ্যতা। পরে, কালিবঙ্গান নামের অঞ্চলে মাটি খুঁড়ে পাওয়া যায় আরও একটি শহরের ধ্বংসাবশেষ। অঞ্চলটি বর্তমান ভারত ও পাকিস্তানের সীমান্তে পুরনাে সরস্বতী নদীর তীরে। এরপর থেকে চারপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ধান মিলতে থাকে পুরনাে সংস্কৃতির। এতে বুঝা যায় সিন্ধু সভ্যতা অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছিল। সিন্ধু সভ্যতার যুগের আরেকটি সংস্কৃতির সন্ধান মিলে নর্মদা নদীর মােহনায়। হরপ্পা সংস্কৃতির বিস্তার ঘটেছিল সৌরাষ্ট্র, কাথিওয়ার এবং গুজরাটে । এছাড়াও রাজস্থানে সিন্ধুর অন্তর্গত চানহুদারােতে এবং আহমদাবাদের লােথালে। বাণিজ্যের প্রয়ােজনে সিন্ধু সভ্যতার মানুষ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। আধুনিক ইতিহাসবিদদের মতে, হরপ্পা সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছিল পশ্চিম ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী সীমান্ত, উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ এবং ক্যাম্বে উপসাগর পর্যন্ত। মনে করা হয়, হরপ্পার মানুষ পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে নতুন নতুন অঞ্চল অধিকার করেছিল। হরিয়ানার অন্তর্গত রূপারে ও উত্তর প্রদেশের আলমগীরপুরে এই সংস্কৃতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে ।
হরপ্পা সংস্কৃতির কিছুকাল আগে মহেঞ্জোদারাে সংস্কৃতির পত্তন ঘটেছিল। পাকিস্তানের কোটদিজি, আমরি, ঝুকার, মঙ্গার প্রভৃতি অঞ্চলে এ সংস্কৃতির বিস্তার ঘটেছিল। হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারাে মিলে গড়ে উঠা সিন্ধু সভ্যতার বিস্তারকে একটি সীমারেখায় টানা যায় - উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে ক্যাম্বে উপসাগর আরব সাগর এবং পশ্চিমে ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে পূর্বে ভারতের উত্তর প্রদেশ পর্যন্ত। প্রাচীন ভারতের উত্তর-পশ্চিমাংশে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এই সভ্যতার বিস্তার ঘটেছিল।