ব্রিটিশ শাসনকালে বাংলায় শিক্ষার প্রসারে ছাপাখানার কীরূপ ভূমিকা ছিল ?
ভূমিকা: অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে ইউরোপের খ্রিস্টান মিশনারিদের মাধ্যমে বাংলার বিভিন্ন স্থানে ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা হয়। বাংলায় শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে এই
উত্তর – শিক্ষার প্রসারে ছাপাখানার ভূমিকা
ভূমিকা: অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে ইউরোপের খ্রিস্টান মিশনারিদের মাধ্যমে বাংলার বিভিন্ন স্থানে ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা হয়। বাংলায় শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে এই ছাপাখানাগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
- পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ : বাংলার ছাপাখানাগুলিতে স্কুলকলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রচুর পরিমাণ পাঠ্যপুস্তক ছাপা হতে থাকে। এইসব পাঠ্যপুস্তকের প্রধান বিষয়বস্তু ছিল সাহিত্য, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল প্রভৃতি। ছাপাখানায় মুদ্রিত বইপত্রের সুন্দর মুদ্রণ এবং কম দাম হওয়ায় তা গ্রামবাংলার সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের হাতেও পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হয়। এই সব বইগুলি বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
- অন্যান্য গ্রন্থ প্রকাশ: ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের পর থেকে বাংলায় বাইবেল, রামায়ণ, মহাভারত, বিভিন্ন প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য প্রভৃতির অনুবাদ, বিভিন্ন গবেষণাপত্র প্রভৃতি প্রকাশিত হয়। এগুলি সুলভে বাংলার সাধারণ পাঠকদের হাতে পৌঁছে যায়।
- সংবাদপত্রাদি প্রকাশ: ছাপাখানাগুলি থেকে বাংলা ও ইংরেজিতে বেশকিছু সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্রও প্রকাশিত হতে থাকে। এইসব সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্রগুলিতে দৈনন্দিন সংবাদ ছাড়াও নিয়মিত বিভিন্ন জ্ঞানমূলক বিষয়ের আলোচনা স্থান করে নেয়।
- নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: ছাত্রদের পাঠ্যপুস্তক রচনা করে তা কম খরচে বা বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি (১৮১৭ খ্রি.) প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি স্থাপিত হলে তার অধীনে বেশ কয়েকটি স্কুল গড়ে ওঠে।
উপসংহার: ছাপাখানা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত সুলভ বইপত্র সাধারণ মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে যায়। ফলে বাংলায় শিক্ষার ব্যাপক ও দ্রুত প্রসার শুরু হয়।